কলকাতা ব্যুরো: করোনা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। দৈনিক সংক্রমণ ঠিক এক জায়গায় অনড়। সোমবার আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল ৩২১১। মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান হল ৩,২২৭। সুস্থতাও প্রায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। সামান্য কমেছে মাত্র।
সোমবার ছিল ৩,০৮৪, মঙ্গলবার হয়েছে ২,৯১৯। দৈনিক মৃত্যুও গত ২০ দিনের গড়ের মধ্যে আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। এই স্থিতাবস্থা কিন্তু মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। এই সরকারি পরিসংখ্যানটাই যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেল সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ওই গবেষণা দেখিয়ে দিয়েছে, এই পরিসংখ্যানে মারাত্মক গলদ আছে। কেন? গবেষকদের বক্তব্য, অধিকাংশ করোনা টেস্ট হচ্ছে Rapid অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতির অনেক ত্রুটি আছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
দেখা গিয়েছে, দিল্লিতে যেখানে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে করোনা পজিটিভিটির হার পাওয়া গিয়েছে ৫ শতাংশ, সেখানে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে এসেছে ১৪ শতাংশ। মহারাষ্ট্রে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে ১০ শতাংশ এবং আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে ১৪ শতাংশ। গবেষণায় বিভিন্ন রাজ্যে এই মডেলের ফারাক বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, এই যে কয়েকদিন ধরে দেশে দৈনিক যে গড় সংক্রমণ ৯০ হাজারের ওপর ছিল, তা প্রকৃতপক্ষে ২ থেকে আড়াই লক্ষ হবে। তার মানে দেশে এখন রোজ এই সংখ্যায় লোক করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।
ফলে পশ্চিমবঙ্গের সংক্রমণ প্রকৃতপক্ষে কত হতে পারে, তা সহজে অনুমান করা যায়। এমআইটির গবেষণাটি সতর্ক করেছে, এই প্রবণতা চলতে থাকলে ২০২১-এর মার্চে গিয়ে দৈনিক সংক্রমণ ৩ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। এই গবেষণা সত্যি হলে রাজ্য কোথায় দাঁড়িয়ে আছে, সহজেই বোঝা যায়। স্বস্তি একটাই, ভাইরাসটির মারণ ক্ষমতা আমাদের দেশে কম। আমাদের রাজ্যেও কম। তার মানে সিংহভাগ আক্রান্ত সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
সরকারি পরিসংখ্যান দেখলেও বোঝা যাবে, মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ২,০৯,১৪৬, আর সংক্রমণ মুক্তের সংখ্যা ১,৮১,১৪২। সুস্থতার হার এদিন ছিল ৮৬.৬১। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনার বলি ৫৯। এর মধ্যে কলকাতার ১১, উত্তর ২৪ পরগনার ১৫, হাওড়ার ৬ জন। ৩ জন করে মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানে। ২ জন করে মৃত্যু পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। হুগলিতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতায় সংক্রমণ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৭, সুস্থ হয়েছেন ৩৮৩ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় ওই দুই পরিসংখ্যান হল ৫১৬ ও ৫১০। রাজ্যে এপর্যন্ত করোনা টেস্ট হয়েছে ২৫,০২,৮২১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫,২২৬।