কলকাতা ব্যুরো: দেশে ২৪ ঘন্টায় এক লক্ষ ৬৮ হাজার, আর রাজ্যে ওই একই সময়ে আক্রান্ত সাড়ে চার হাজার। তারপরেও সামগ্রিকভাবে করোনা ঠেকাতে কতটা ঘুম ভেঙেছে দুই সরকারের, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এরইমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টেও কর্মীদের প্রায় অর্ধেকের করোনা ধরা পড়ায় পরিস্থিতি আরো ঘোরালো হয়ে উঠেছে। যদিও এই অবস্থার মধ্যেও উত্তরাখণ্ড সরকার ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সৌজন্যে সোমবার পর্যন্ত কুম্ভ মেলায় ৩০ লাখের বেশি মানুষ পুণ্য স্নান করেছেন। ফলে সেখানে কেন করোনা বিধি মানানোর কোন ব্যবস্থা হয়নি, এই সহজ এবং সত্যি প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন দিক থেকে। কিন্তু সরকার এবং বিচার বিভাগ যারা নিতে পারে এই দায়িত্ব, তারা এখনও নীরব
যদিও বিক্ষিপ্তভাবে মহারাষ্ট্র সরকার লকডাউন এর পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গুজরাট হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে দ্রুত করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মাদ্রাজ হাইকোর্ট নির্বাচন চললেও তামিলনাড়ু সরকারকে কড়া নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে দ্রুত ব্যবস্থা করার। মধ্যপ্রদেশ সহ বহু রাজ্য বিভিন্ন জায়গায় কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ব্যতিক্রম এ রাজ্য। এ রাজ্যে করোনার ভয় থেকেও ভোটের উৎসব এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এরাজ্যে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। কিন্তু তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তিনটি জনসভা করেছেন। অমিত শাহ করেছেন চারটি জনসভা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বেশ কয়েকটি জনসভা করে ফেলেছেন। ফলে কাতারে কাতারে মানুষ মাস্ক বিহীন ভাবে, দূরত্ব বজায় না রেখে সেসব সভা- মিছিল এ গিয়ে নেতাদের জন্য হাততালি দিয়েছেন। সব পক্ষই একে অপরকে ভোটে হারাতে নাটকের ডায়লগ দিয়ে চলেছেন। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী – করোনা নিয়ন্ত্রণে সেইভাবে কোন বাক্য খরচ করার দায় নেননি। ফলে এ রাজ্যে এপ্রিল মাসের পরে পরিস্থিতি কী হবে তা নিয়ে যথেষ্টই আতঙ্ক রয়েছে।