এক নজরে

Sitai BSF Firing: সিতাইয়ে বিএসএফের গুলিতে মৃত ৩ গরুপাচারকারী

By admin

November 12, 2021

কলকাতা ব্যুরো: বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হল তিন গরুপাচারকারীর। শুক্রবার ভোররাতে কোচবিহার জেলার সিতাই থানার অন্তর্গত চামটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাণ্ডারী বিএসএফ ক্যাম্প এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে দুই বাংলাদেশি এবং একজন ভারতীয় গরুপাচারকারী রয়েছে। ভারতীয় পাচারকারীর নাম প্রকাশ বর্মন।

অসমর্থিত সূত্রে মোট চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এক জনের দেহ পড়ে রয়েছে সীমান্তের কাঁটা তারের এপারে। অপর তিন জনের দেহ ওপারে পড়ে। গুলি চালনার ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। 

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোররাতে চামটা এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে গরুপাচার করা হচ্ছিল। সেইসময় বিএসএফ জওয়ানরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছন। পাচারকারীদের তাঁরা থামতে বললে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ পাল্টা গুলি চালালে তিনজনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিতাই থানার পুলিশ।

প্রসঙ্গত, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার একেবারে গায়ে কপি কল জাতীয় একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিএসএফের অফিসারদের বক্তব্য, এইভাবে বাঁশ দিয়ে তৈরি অস্থায়ী এই কপিকল এর মাধ্যমে, এপার থেকে ছোট গরু তুলে নিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে অনায়াসেই পৌঁছে দেওয়া যায়। এই ব্যবস্থাটাই এখানে করার চেষ্টা করেছিল পাচারকারীরা। বারংবার তাদের সতর্ক করলেও তারা বেপরোয়াভাবে এই কাজ করতে থাকে।

এই প্রসঙ্গে বিএসএফের এক অফিসার বলেন, বনগাঁ সীমান্তেও এমন ভাবে মানুষ পাচার করত পাচারকারীরা। তাদের সেই যন্ত্র ধরা পড়ে বিএসএফের হাতে।

এদিকে সিতাই কাণ্ডে বিএসএফের কড়া সমালোচনা করেন উদয়ন গুহ। তাঁর অভিযোগ, বিএসএফের মদতেই চলে গরু পাচার। ভারতীয়দের ওপরেই জুলুমবাজি করে বিএসএফ। সিতাইয়ের ঘটনায় বিধায়ক উদয়ন গুহ শুক্রবার দুপুরে বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ভারতীয় সীমান্তের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটা তারের বেড়া। ভারত তার নিজের জায়গা ছেড়ে কাঁটা তারের বেড়া দিচ্ছে। যত জুলুম ভারতীয়দের ওপর। বিএসএফের কী জুলুম আমরা জানি। আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করি, আমরা জানি। আমাদের পর্যন্তও ছাড়ে না ওরা। গাড়ি আটকে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে। সাধারণ মানুষদের উপরেও ওদের অত্যাচার বাড়বে। সিতাইয়ের ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাবদিহি করা প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন তিনি।

কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে সানু রাজ বলেন, সিতাইতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। গোটা ঘটনা কীভাবে ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে এদিনই সিতাই সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলি চালানোর ঘটনায় রিপোর্ট তলব করলো গুয়াহাটির বিএসএফ-এর আইজি। কোচবিহার সীমান্ত গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের আওতায় পড়ে। কী ঘটনা ঘটেছিল? কতজন জড়ো হয়েছিল? গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কিনা? এমনই ৬টি বিষয়ে জানতে চেয়ে রিপোর্ট চাইলেন গুয়াহাটির আইজি। গুলি চালানোর কারণ উল্লেখ করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে বিএসএফ গুলি চালনার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে গরু পাচারকারী তত্ত্বই খাঁড়া করেছে। কেন গুলি চালাতে হল? কেন তাঁদের ধাওয়া করে ধরা গেল না? আদৌ নিহতরা কি গরু পাচারকারী? এসব একাধিক প্রশ্ন উঠছে। বিএসএফের ওপরেও কি হামলা হয়েছিল? প্রতিরোধ গড়তেই কি গুলি? প্রশ্ন উঠছে সেসবও। তবে বিএসএফের সরকারি বক্তব্যের পরই আসল বিষয়টি স্পষ্ট হবে।