কলকাতা ব্যুরো: আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত র বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল সিবিআই। তার বিরুদ্ধে এর আগে এই অভিযোগে মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। ভিজিলান্স তদন্ত করেছে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে। এবার প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর সিবিআই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসভঙ্গ, সরকারী পদে বসে বিশ্বাসভঙ্গ এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে ২০১৬ সালে তাকে উপাচার্য পদ থেকে বরখাস্ত করেন রাষ্ট্রপতি। যা ভারতের ইতিহাসে প্রথম। তার আমলে বেআইনি ভাবে শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগের অভিযোগ ছিল।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ গুলি কি কি?
প্রথমত তিনি জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেনশন নেওয়ার কথা লুকিয়ে রেখে বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসেবে বেতন তুলছেন। দ্বিতীয়তঃ তিনি বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বেসিক আশি হাজার টাকা বেতন নিতেন। যদিও ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী, একজন ভিসি ৭৫ হাজার টাকার বেশি নিতে পারেন না। অতিরিক্ত ভাতা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা পেতে পারেন। তৃতীয়ত, স্বেচ্ছাচারিতা করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তিনি একটি আইনি পরামর্শ দাতা সংস্থা কে বিশাল অংকের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যা কেন্দ্রীয় সরকারের আইনের বিরুদ্ধে।কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলেই প্রাক্তন উপাচার্য বিশাল পরিমাণ টাকা খরচ করছেন বিশ্বভারতীর নামে জমি এবং বাড়ি কেনার জন্য। তার নিজের চলার জন্য দামি গাড়ি তিনি কিনে ফেলেছেন প্রতিষ্ঠান টাকায়। আর সেখানে তা অন্য খাত থেকে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিয়মিত মদ্যপান করতেন। আর তার সেই পনের যাবতীয় খরচ বহন করতে হতো বিশ্বভারতীকে। এই অভিযোগে একটি মামলাও দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। যদিও সেখানে তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রচুর টাকা আইনবিরুদ্ধ হবে পাইয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আবার এক ঠিকাদার সংস্থাকে তিনি কোন টেন্ডার ছাড়াই এক কোটি ৬০ লক্ষ টাকার কাজের বরাত পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে এক রিপোর্টে আর্থিক নয়-ছয় উল্লেখ করা হয়েছে।এরই সঙ্গে সেন্ট্রাল ভিজিলান্স কমিশন তার বিরুদ্ধে কিছু তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করেছে, যার অনেকটাই প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে খবর।অভিযোগগুলো নিয়ে প্রাথমিকভাবে প্রথমে অনুসন্ধান চালায় সিবিআই। সেখানে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা আছে বলে মনে করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পরেই সিবিআই তার বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে। তার সঙ্গেই আরো দুজন অজ্ঞাত পরিচয়ের নামেও অভিযোগ দায়ের করেছে সিবিআই এর আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা। প্রাক্তন উপাচার্য অবশ্য আগেই তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। হাইকোর্টে মামলাতেও তিনি নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন।