কলকাতা ব্যুরো: যে ইউনান প্রদেশের গবেষণাগার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে বিশ্বজুড়ে নিজেকে ভিলেন বানিয়েছে চীন, সেই ইউনানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিজের মানবিক মুখ দেখিয়ে দিয়েছে সেই চিনই।প্রায় দেড় বছর ধরে ইউনান প্রদেশ পরিযায়ী হাতির দলের ছন্নছাড়া ঘোরাফেরা আতঙ্ক ছড়িয়ে ছিল। হাতির দল তার করিডোরের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করত। অথচ সেই এলাকার মধ্যে মানুষের বসবাস ছিল। এখন সেই হাতিদের নিরুপদ্রব ঘোরাঘুরি ব্যবস্থা করতে, প্রায় দেড় লক্ষ মানুষকে সেই হাতির করিডর থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করল জিন পিংয়ের সরকার।
চিন শুধু ভারতকে খোঁচা মারতেই জানে, এমনটা নয়, সীমান্তে যেচে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া থেকে যাবতীয় শক্তি প্রদর্শনের সঙ্গেই, বিশ্বে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে ভিলেন এর শ্রেষ্ঠ ভিলেন হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছে। আবার এই চিন বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে দেড় লক্ষ মানুষকে স্থানান্তর করতেও পিছপা হয় না।গত প্রায় দেড় বছর ধরে ১৪ টি হাতির একটি দল ইউনান প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তাদের নিরুপদ্রব সঠিক পথে পরিচালনা করতে প্রায় ২৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয় পথে। প্রচুর পরিমাণে গাড়ির ব্যবস্থা করে সরকার। একই সঙ্গে ওই হাতিদের জন্য ১৮০ টন খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হয়। সেই হাতির দল নদী পেরিয়ে গত সপ্তাহে আরো দূরে চলে যায়। চীন প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থার দাবি, গত কয়েক বছরে সরকার এমনভাবে বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণের ব্যবস্থা করায় প্রায় ৩০০ হাতির দল তৈরি হয়েছে। তাদের নিরুপদ্রবে চলার জন্য সরকার বসতি সরিয়ে দিয়েছে হাতির করিডর থেকে।
অথচ এশিয়ান হাতির একটা বড় অংশ ভারতে রয়েছে। হাতির করিডর যেন সব রাজ্যের মাথা ব্যথার কারণ। কারণ মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ হাতির করিডোরের উপরে মানুষের বসবাস। ফলে প্রায়ই বন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সংঘর্ষ বেঁধে যাচ্ছে। মানুষকে হাতি মারছে, আবার মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়ছে হাতি। এই সংঘাত দূর করতে এখনো কোনো দীর্ঘ মেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।উল্টে এ রাজ্যের উত্তরবঙ্গে হাতির যাতায়াতের পথের মধ্যেই রেল লাইন তৈরি করা হয়েছে। ডুয়ার্সে সেই রেল লাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হচ্ছে বহু হাতির। কিন্তু চীনের মতো মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর সংঘাতের নিরসন করতে প্রয়োজনে মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার মত দুঃসাহস বা প্রশাসনিক দৃরতা কোনটাই এদেশের সরকারের নেই, তা স্পষ্ট।