কলকাতা ব্যুরো : কত আলো, কত রোশনাই। উপচে পড়া মানুষের ভিড়। হোটেল রেস্তোরায় লাইন। অন্যান্য বছর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে এমনই সব ছবি দেখা যায়। মানুষের ভিড়ে ঠাঁই মেলা ভার হয়ে ওঠে। এবার অষ্টমী পেরিয়ে নবমী পড়ে গেল। চন্দননগর আলো ছড়িয়ে ও যেন ম্লান। কত দূর দূরান্ত থেকে লোক আসেন। এবারে ভিড় পাতলা। পুজো গুলি হচ্ছে বটে তবে ম্রিয়মাণ। দুর্গাপূজা নিয়ে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা জারি হবার পরই চন্দননগর শহরজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। জল্পনা চলছিল কেমন করে হবে পুজো ? চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এবং পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে ছিল। এবারে নেই নবমীর চমক বা দশমীর দেবীবরণ আর বিসর্জনের শোভাযাত্রা। মাস্ক হীন অবস্থায় রাস্তায় ঘুরলে গ্রেপ্তারের নির্দেশ আছে প্রশাসনের।
তিনদিক খোলা মঞ্চে পুজো হচ্ছে বেশিরভাগ। কিন্তু দর্শকদের প্রবেশ নিষেধ। বেশিরভাগ মন্ডপ দড়ি দিয়ে ঘেরা। ভেতরে করোনার সতর্কবার্তা রয়েছে। অনেক মণ্ডপে রয়েছে স্যানিটাইজার গেট। ৫ মিটার দূর থেকে প্রতিমা দর্শন সারতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। পূজা কমিটির লোকজন বাদে আর কারো কে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না মণ্ডপে।চন্দননগরের কেন্দ্রীয় জগধাত্রী পূজা কমিটির অধীনে রয়েছে ১৭১ টি পুজো। এর মধ্যে ১৩ টি তে ঘট পুজো হচ্ছে। বিশেষ জয়ন্তী পালিত হচ্ছে দশটি পুজোর ক্ষেত্রে। বিসর্জনে আতিশয্য নেই এবার। বিশেষ জয়ন্তীর পুজো গুলিতে এবারে ৫০ বছরে পা দিয়েছে বৈদপতা পূজা কমিটি। তাদের পরিকল্পনা ছিল অনেক কিন্তু এবারে তার কিছুই হলো না। সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষাল জানালেন আসছে বছর আবার হবে।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ূন কবীর জানালেন কোভিড আতঙ্ক সব পূজা কমিটির মধ্যেই রয়েছে। সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন সবাই। এদিকে জাঁকজমকহীন এই পুজোয় মন ভরছে না দর্শনার্থীদের। দূর থেকে ঠাকুর দেখতে ভালো লাগছে না কারোরই।
সৌমেন বৈদ্য ওখানকার আদি বাসিন্দা। কথায় কথায় জানালেন, ” সারা বছরই পুজোর এই কয়েকটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ছোটবেলা থেকেই খুব আনন্দ হয জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়। কিন্তু কভিড পরিস্থিতিতে এবারে পুজো দেখে মন ভরছে না। কি আর করা যাবে? সব কিছুর সঙ্গেই মানিয়ে নিতে হবে। এভাবে পুজো দেখতে হবে কোনোদিন ভাবি নি।”