কলকাতা ব্যুরো: হয় ঐতিহ্য মেনে প্রতিমা হবে নির্দিষ্ট উচ্চতার। না হয় ঘট পুজোই হবে। করোনা আবহে উচ্চতা কমেছে মা-দুগ্গার প্রতিমার। বড় প্রতিমার বদলে এবার চাহিদা বেশি ছোট মূর্তিরই। কিন্তু সেই পথে হাঁটতে নারাজ চন্দননগর। জগৎখ্যাত ঐতিহ্যবাহী এখানকার জগদ্ধাত্রী পুজো হবে আগের মতোই। উচ্চতা কমিয়ে যেমন খুশি জগদ্ধাত্রী প্রতিমা মূর্তি বানানো যাবে না। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিবছর পূজিত হওয়া স্থায়ী কাঠামোকে ব্রাত্য করে আলাদা প্রতিমা অর্থাৎ ছোট ঠাকুর নির্মাণের মাধ্যমে পূজা করা যাবে না। চন্দননগরের ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল রেখে বারোয়ারির স্থায়ী কাঠামোয় মাতৃ প্রতিমা নির্মাণের মাধ্যমে পুজো করতে হবে। তবে স্বাভাবিক উচ্চতা সম্পন্ন পূজা আয়োজনে অনিচ্ছুক যারা, তাঁরা স্থায়ী কাঠামোয় জগদ্ধাত্রী মাতার প্রতিচ্ছবি ফ্লেক্স স্থাপনের মাধ্যমে প্রতিমা বিহীন ঘট পূজার আয়োজন করতে পারবেন।
করোনা আবহে কলকাতায় পুজো কত বড় করে হবে তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন ছিল গোটা দেশ বিদেশের মানুষের, তেমনই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো কত বড় করে হবে, বা আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও মানুষের আগ্রহ কম ছিল না। এর আগে কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এ বিষয়ে সমস্ত বারোয়ারির কাছে মতামত চায়। সেখানে ১১৯ টি পূজা কমিটি চিরাচরিত স্বাভাবিক উচ্চতা সম্পন্ন প্রতিমা নির্মাণের মাধ্যমে পূজা করার পক্ষে মত দেয় এবং ৩৩ টি পূজা কমিটি ঘট পূজার পক্ষে মতামত দেয়। তার ভিত্তিতেই এদিন বৈঠক হয়। সেখানে আড়ম্বরহীন পূজা অর্চনাদি আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রশাসনিক অনুমতি গ্রহণ করে সরকারি স্বাস্থ্য বিধিকে মান্যতা দিয়ে পরিবেশবান্ধব পূজার ওপর বিশেষ জোর দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি তিন দিক উন্মুক্ত বড় পরিমাপের আসর যুক্ত মন্ডপ নির্মাণের মাধ্যমে প্রতিমা দর্শন এর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে পুজো কমিতিগুলোকে। একই সঙ্গে এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পূজার দিন গুলিতে মন্ডপে প্রতিদিন স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা এবং মাস্কবিহীন অবস্থায় পূজামণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। মানুষ ও যানচলাচলের জন্য পথ উন্মুক্ত রেখে আলোকসজ্জা প্রদর্শন করা যেতে পারে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে প্রতিমা নিরঞ্জনের গাইডলাইন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রকাশ করা হবে কমিটির তরফে জানিয়েছেন কর্তারা।