কলকাতা ব্যুরো: কোভিড পরিস্থিতিতে সব মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনই ‘স্পেশ্যাল’ তকমা দিয়ে চলছিল। এজন্য বাড়তি ভাড়াও গুণতে হচ্ছিল যাত্রীদের। এবার ‘স্পেশ্যাল’ তকমা থেকে মুক্ত হচ্ছে দূরপাল্লার সব ট্রেনই। শুক্রবার রেল বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর কোচিং রাজেশ কুমার প্রতিটি রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে লিখিতভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, দূরপাল্লার ট্রেনগুলির ‘স্পেশ্যালে’র তকমা তুলে দ্রুত আগের পরিস্থিতি ফিরয়ে আনার জন্য।

নির্দেশে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতির জন্য নিয়মিত মেল, এক্সপ্রেস চালানো সম্ভব হয়নি। অনিয়মিতভাবে কিছু ট্রেন চালানো শুরু হয়। প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সিস্টেমে ট্রেনগুলিকে আনতে তার নম্বরের সামনে ‘শূন্য’ বসিয়ে স্পেশ্যাল তকমা বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে আসায় আবার সব ট্রেন চালু হয়েছে। ফলে স্পেশ্যাল ট্রেনে সফরের জন্য যে অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ ভাড়া যাত্রীদের দিতে হত, দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেলে তা আর দিতে হবে না বলেই খবর। যে ট্রেনগুলি ‘স্পেশ্যাল’ বলে চলছিল তা আবার পুরনো নম্বরে চলা শুরু করবে। সব ট্রেনই আগের টাইম টেবিল মেনেই চলবে।
চিঠিতে উল্লেখ না থাকলেও জানা গিয়েছে, স্পেশ্যালের তকমায় ভাড়া প্রায় দেড়গুন নেওয়া হচ্ছিল। নানা মহল থেকে এই স্পেশ্যাল বলে ট্রেন চালানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে পুরনো ভাড়া নেওয়ার দাবি ওঠে। পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেল এই নির্দেশ পাওয়ার পর জানিয়েছে, যত শিগগির সম্ভব তারা ‘স্পেশ্যাল’ ট্রেনগুলিকে নিয়মিত করে পুরনো ভাড়া নেওয়া শুরু করবে।

অন্যদিকে নিত্যযাত্রীদের সুবিধার্থে এবং ট্রেনে ভিড় কমাতে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে খুলে যাচ্ছে স্কুল-কলেজও। ফলে অফিসযাত্রীদের সঙ্গে জুড়বে পড়ুয়াদের ভিড়ও। তাই কোভিড পরিস্থিতিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলো দক্ষিণ-পূর্ব রেল।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ সাড়ে সাত মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ৩১ অক্টোবর লোকাল ট্রেন চলায় সবুজ সংকেত দেয় রাজ্য। ধাপে ধাপে বাড়ানো হয় ট্রেনের সংখ্যাও। প্রথম দফায় ৪৮টি লোকাল ট্রেন চালানো শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। ভিড় সামলাতে ৮ নভেম্বর থেকে সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ১০৪। স্কুল-কলেজ খোলার কারণে এবার ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪৬ করার প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল বলে খবর।

রাজ্য সরকার ট্রেন বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিলেই শীঘ্রই হাওড়া, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে যাতায়াতের বিকল্প বাড়বে। রেল সূত্রে খবর, আপে ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৭২ এবং ডাউনে ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৭৪টি।