এক নজরে

Municipality Election: পুরভোটে স্থগিতাদেশ জারির এক্তিয়ার কার?

By admin

January 13, 2022

কলকাতা ব্যুরো: পুরো ভোট স্থগিত করতে কে দায়িত্বশীল, এই এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার তাল ঠোকাঠুকি করল দুই প্রতিষ্ঠান। একদিকে রাজ্য সরকারের দাবি, ভোট ঘোষণার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারির আগে রাজ্যের মতামত নিতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু ভোট করার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ এক্তিয়ার কমিশনের। কমিশনের পাল্টা বক্তব্য, রাজ্যের মতামত ছাড়া ভোট স্থগিত বা পিছিয়ে দেওয়া যায় না। এদিন প্রায় দু’ঘণ্টা শুনানিতে সিংহভাগ সময় এই প্রশ্নের উত্তর পেতে কেটে গেল হাইকোর্টের। বিরক্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের একসময় প্রশ্ন, ২৭ বছর আগে একটি আইন তৈরী হয়েছে। অথচ এতদিন পরে সেই আইনে একটি প্রশ্নের উত্তর রাজ্য এবং কমিশন ভিন্ন জবাব দিচ্ছে। এটা খুব বিস্ময়কর এবং হতাশাজনক।

একসময় রীতিমতো আদালতের অনড় মনোভাবে নাজেহাল হয়ে পড়ে কমিশন। কমিশন এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আরও দু’দিন সময় চায়। তাতে প্রবল আপত্তি জানায় হাইকোর্ট। শেষপর্যন্ত কমিশনের নিযুক্ত তিন জন আইনজীবী দফায় দফায় কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শেষ পর্যন্ত জানান, মহামারী আইনে এখন যদি ভোট পিছতে হয়, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের সিদ্ধান্ত আবশ্যক। তারপরেই কমিশন সরকারিভাবে ভর্তি হতে পারবে। যদিও রাজ্য তার আগের বক্তব্য অনড় থাকে।

পূর্ব নির্ধারিত নির্ঘণ্ট মেনে আগামী ২২ জানুয়ারিই সংশ্লিষ্ট চার পুরনিগমে ভোট করাতে চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এমনটাই জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র ৷ একইসঙ্গে তিনি জানান, কমিশন এককভাবে ভোটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ৷ তবে রাজ্য সরকার যদি বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘বিপর্যয়’ ঘোষণা করে, সেক্ষেত্রে নির্বাচনের দিনক্ষণ এমনিতেই পিছিয়ে যাবে ৷

বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি চলাকালীন আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ৷ রাজ্যের সম্মতি থাকলে একমাত্র তবেই নির্বাচন স্থগিত রাখা যেতে পারে ৷ তাছাড়া, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই ভোটদানের সময়সীমা একঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে ৷ যাতে ভোটাররা তাঁদের সুবিধা মতো এসে ভোট দিতে পারেন ৷

পাশাপাশি, জরুরি পরিস্থিতির জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও থাকছে ৷ আইন অনুযায়ী, কমিশন ইচ্ছা মতো একা পূর্ব নির্ধারিত ভোট স্থগিত করতে পারে না ৷ অন্যদিকে, ভোট স্থগিত রাখার ক্ষেত্রে এদিনও কমিশনের কোর্টেই বল ঠেলেছেন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল ৷ তাঁর দাবি, ভোট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত একমাত্র কমিশনই নিতে পারে ৷এছাড়াও রাজ্যের তরফে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট পুরনিগমের মধ্যে আসানসোলে ৯৮ শতাংশ মানুষকেই টিকার প্রথম ডোজ এবং ৭২ শতাংশ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৷ চন্দননগরে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের টিকাকরণের পরিসংখ্যান যথাক্রমে ৯৮ এবং ৯৫ শতাংশ ৷ আর শিলিগুড়ি ও বিধাননগরে ১০০ শতাংশ বাসিন্দাকেই টিকার দু’টি ডোজ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে ৷

তবে এদিন দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব জানতে চান, ভোট স্থগিত করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের বক্তব্যে সামঞ্জস্য নেই কেন? দু’পক্ষের কাছেই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ভোট স্থগিত করার এক্তিয়ার তাহলে কার?