কলকাতা ব্যুরো: করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই সামলে উঠেছে রাজ্য। প্রথম, দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর করোনার তৃতীয় ঢেউ স্তিমিত। প্রাথমিক থেকে হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার খুলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি স্কুলের বেতনের কুড়ি শতাংশ কম দেওয়ার যে সুযোগ ছিল পড়ুয়াদের কাছে, তা আর থাকছে না অর্থাৎ ৮০ শতাংশ নয়, এখন থেকে পুরো বেতনই দিতে হবে। পয়লা মার্চ থেকে নিজেদের মতো করে বেতন চাইতে পারবে স্কুলগুলি পাশাপাশি অভিভাবকদের অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে বকেয়া ফি। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্কুল। তবে অনলাইনে চলছিল পড়াশোনা। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবকই বেসরকারি স্কুলের বেতন দিতে পারছিলেন না। এছাড়া স্কুলগুলি অযৌক্তিক ফি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ ছিল অনেকের। স্কুলের ফি কমানোর দাবিতে অভিভাবকরা সরব হয়েছিলেন। বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। বেসরকারি স্কুলগুলি অযৌক্তিক ফি নিচ্ছে, এই অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
মানবিকতার খাতিরে ২০২০ সালে স্কুলগুলিকে বেতন বৃদ্ধি না-করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত এবং বকেয়া বেতন মেটাতে না-পারলে পড়ুয়াদের বহিষ্কার না-করার নির্দেশও দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি লকডাউনে কারণে স্কুলের বেতনের কুড়ি শতাংশ কম দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। বকেয়া বেতন মেটাতে না-পারলেও অনলাইনে পড়াশুনা ও পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে যেন স্কুলগুলি বাধা সৃষ্টি না-করে সেই নির্দেশও পৌঁছেছিল স্কুলগুলির কাছে। তবে এই সুবিধা শুধুমাত্র করোনা পরিস্থিতি বিচার করে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে সেই অচল পরিস্থিতি আর নেই। করোনা আতঙ্ক দূরে সরিয়ে বছর দুয়েক পর খুলে গিয়েছে স্কুল। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে এখন বেতন চাইতেই পারে অর্থাৎ, এখন থেকে স্কুলগুলিকে পুরো বেতন দিতে হবে পড়ুয়াদের।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী, ১ মার্চ থেকে স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে বেতন চাইতে পারবে। এছাড়া অভিভাবকদের বকেয়া ফি-র অন্তত ৫০ শতাংশ অবিলম্বে দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি। তাই ২৫ মার্চ পর্যন্ত কোনও স্কুল বকেয়া ফি নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারবে না এমনটাই জানালো কলকাতা হাইকোর্ট।