কলকাতা ব্যুরো: কয়লাকাণ্ডে ইডিকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের। কলকাতায় কেন একজন সাক্ষীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তোলে আদালত। নিজাম প্যালেস বা অন্য দফতরে কেন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে না ইডি? প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার যোগ্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার কয়লাকাণ্ডের মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানি চলাকালীনই ভর্ৎসনার মুখে পড়েন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি।

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এদিন বলেন, ইডি কি এতই অযোগ্য যে একজন সাক্ষীকে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছে না তারা? আদালত তো তদন্ত করতে বারণ করেনি। তা সত্ত্বেও কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নেই? নিজাম প্যালেস বা অন্যত্র কেন জিজ্ঞাসাবাদ করছে না ইডি? মাত্র দু’বার সমন পাঠিয়ে চুপ কেন? ইডির এই আচরণ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

যদিও ইডির বক্তব্য ছিল, তাদের যে আইনজীবী এই মামলা লড়ছেন তিনি এই মুহূর্তে নেই। সে কারণেই তাদের সময় দরকার হচ্ছে। একইসঙ্গে এদিন কয়লাকাণ্ডে অন্যতম সাক্ষী সুমিত রায়ের রক্ষা কবচের মেয়াদ বাড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী দু’ মাসের জন্য অন্তর্বর্তী নির্দেশের সময় সীমা বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে ২০ ডিসেম্বর তাঁর রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়িয়েছিল আদালত। কয়লাকাণ্ডে তাঁকে দিল্লিতে তলব করেছিল ইডি। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই আদালতে আসেন সুমিত রায়। কয়লাকাণ্ড-সহ একাধিক তদন্তমূলক মামলার ক্ষেত্রে কেউ জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য যখন আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন, ইডি বলছে তাদের তদন্ত করতে আরও সময় দেওয়া হোক।

এই ঘটনায় বিরক্ত বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তাঁর বক্তব্য, ইডি কেন কলকাতায় ডেকে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে না। সুমিত রায়ের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে তিনি প্রশ্ন করেন, কলকাতার নিজাম প্যালেসে ডেকে সুমিত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেত। কেন ডাকা হল না? পাশাপাশি কেন দু’ বার সমন পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়ে গেল ইডি সে প্রশ্নও তোলেন।

কয়লাকাণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলা, সেখানে একাধিক নাম উঠে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। অথচ সে অর্থে বড় পদক্ষেপ এখনও কেন করা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিধানসভা ভোটের আগে কয়লাকাণ্ড নিয়ে যেভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি শোরগোল ফেলেছিল, ভোট মেটার পর সেই তৎপরতা কেন দেখা যায়নি তা নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে। তবে এভাবে তদন্ত ধীর গতিতে এগোলে মূল অভিযুক্তরাও সময় পেয়ে যাবে বলেই মনে করছে আদালত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version