কলকাতা ব্যুরো: বালির জলা জমি ভরাট নিয়ে বিবাদের ঘটনায় তপন দত্ত খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতির রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। ২০১১ সালে ৬ মে খুন হন তপন দত্ত। সেই সময় তপন দত্ত এলাকায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ছিলেন।
বালির নিশ্চিন্দা এলাকায় একটি বিশাল জলাভূমি ছিল। সেই জলাভূমির প্রতি নজর ছিল স্থানীয় প্রোমোটারি চক্রের। তৃণমূল তখন সবেমাত্র ক্ষমতায় এসেছে। এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দলের কর্মীরা। এই অবস্থায় ওই জলা ভরাট নিয়ে দলের ভিতরে আপত্তি তুলে কাজে বাধা দেন তপন। আর এতেই জেলার এক দাপুটে নেতা তথা বিধায়ক-মন্ত্রীর বিরাগভাজন হন তিনি।
খুনের দিন রাতে বাড়ি ফিরছিলেন তপন দত্ত। সেখানে রেলগেটের কাছে তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়। তার পর থেকেই এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত ও সিবিআইয়ের দাবিতে দীর্ঘ ১১ বছর লড়াই চালিয়ে এসেছেন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। এদিন আদালত চত্বরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় তিনি জানান, এবার আশা করি দোষীরা শাস্তি পাবে।
তপন দত্ত খুনের পর রাজ্যজুড়ে হইচই পড়ায় সিআইডি তদন্তভার নেয়। প্রথম দফায় অভিযুক্তদের নামে যে চার্জশিট দেওয়া হয়, তাতে হাওড়ার এক মন্ত্রীর নাম ছিল। তার পরেই সাপ্লিমেন্টারি একটি চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে। আশ্চর্যজনক ভাবে সেখান থেকে ওই মন্ত্রীর নাম উধাও হয়। প্রতিমাদেবী হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান এবং মামলা চালিয়ে যেতে থাকেন।
সেই সময় বেশ কয়েকবার ফোনে এবং রাস্তায় প্রতিমাদেবী এবং তাঁর মেয়েদের হুমকি দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও এতোটুকু দমেননি প্রতিমা দত্ত। এদিন সিবিআই নির্দেশে পর তিনি বলেন, ঘরে বন্দির মতো অবস্থায় দিন কাটাতে হত। এই নির্দেশে আমি খুশি। আমার স্বামীর খুনের অপরাধীরা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবার অন্তত দোষীদের শাস্তি হবে।