কলকাতা ব্যুরো: বিএসএফ নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে এই নিয়ে মঙ্গলবারই বিধানসভায় প্রশ্ন তোলে শাসকদল। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন করে বিএসএফের এডিজি ওয়াই বি খুরানিয়া বললেন, আমরা আগেও গ্রেফতার বা আটক করতাম। এখনও করছি কিন্তু আমরা কাউকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারি না। যেকোনও প্রকারের ঘটনায় ধৃতকে আটক বা গ্রেফতারের পর আমরা স্থানীয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিই। বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে রাজ্য সরকারের সেই অভিযোগকে নস্যাৎ করে এই বিবৃতি দিলেন বিএসএফের এডিজি ওয়াই বি খুরানিয়া।
পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই কাজ করতে চায় বিএসএফ। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট জানালেন বিএসএফের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল (এডিজি) ওয়াই বি খুরানিয়া। এডিজি বলেন, আমাদের সংস্থা কোনও তদন্তকারী সংস্থা নয়। আমাদের মূল লক্ষ্য অনুপ্রবেশ আটকানো। আমরা কখনওই রাজ্য পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমরা সবসময় চাই পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই কাজ করতে।
মঙ্গলবারই রাজ্য বিধানসভাতে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ একটি প্রস্তাব আনে। সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১১২টি ও বিপক্ষে ভোট পড়ে ৬৩টি। প্রস্তাবের উপর আলোচনা চলাকালীন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক উদয়ন গুহ একটি বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, তল্লাশির নাম বিএসএফ জওয়ানরা বহু সময় মহিলাদের হেনস্থা করেন। এই নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য বিধানসভা। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে রীতিমতো বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তারপর বুধবারই বিএসএফ কর্তার এই সাংবাদিক সম্মেলন।
এডিজি খুরানিয়া বলেন, বিএসএফের কাছে কোনও পুলিশি ক্ষমতা নেই কারণ তার কাছে এফআইআর নথিভুক্ত করার এবং তদন্ত করার ক্ষমতা নেই। যেকোনও আটক বা গ্রেফতার ব্যক্তিকে অবশ্যই রাজ্য পুলিশ বা অন্য কোনও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতে হবে। রাজ্য পুলিশের অধিকার ক্ষেত্র আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত ব্যাপ্ত আছে।
তিনি এও বলেন যে, সেই সুবাদে, বিএসএফের বর্ধিত অধিকার ক্ষেত্র পুলিশের হাতকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। এটি রাজ্য পুলিশের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী ও পরিপূরক করার লক্ষ্যে একটি সক্ষম বিধান। বিএসএফ যৌথ অভিযান পরিচালনার জন্য পুলিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে, যার মধ্যে গভীর এলাকায় যৌথ টহল, যৌথ নাকা ইত্যাদি এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিভিন্ন স্থানে মানব পাচার বিরোধী ইউনিট স্থাপন সামিল রয়েছে।
একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন যে, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসম ছাড়াও, অন্যান্য রাজ্য যেখানে বিএসএফ পূর্ব কম্যান্ড অবস্থান করছে যেমন মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরা, সেখানে বিএসএফের অধিকার সমগ্র রাজ্যজুড়ে। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তা বজায় রাখতে বিএসএফ সমস্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে চলেছে।