কলকাতা ব্যুরো: উত্তরাখণ্ডে বাংলার আরও ৫ অভিযাত্রীর দেহ উদ্ধার হলো। মঙ্গলবার কপকোট ব্লকের সুন্দরঢুঙ্গা হিমবাহ থেকে ওই ৫ জনের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের চন্দ্রশেখর দাস, সরিৎশেখর দাস, সাগর দে, প্রীতম রায় এবং সাধন বসাক বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। ট্রেকিংয়ে বেরিয়ে ২০ অক্টোবর নিখোঁজ হয়ে যান ওই ৫ জন। তারপর থেকে তাঁদের খোঁজ চলছিল। আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় মাঝখানে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। তবে মঙ্গলবার রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দেহগুলি উদ্ধার করে।
ওই ৫ অভিযাত্রীর সঙ্গে খিলাফ সিং দানু নামের স্থানীয় এক গাইডও ছিলেন। ৫ কিলোমিটার রেঞ্জের ওয়াকি টকির মাধ্যমে ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় শেষ বার সমতলে যোগাযোগ করেন তিনি। তার পর থেকে তাঁর কোনও হদিশ নেই। এদিন অভিযাত্রীদের দেহ উদ্ধার হলেও, দানুর খোঁজ পাননি উদ্ধারকারীরা।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ অক্টোবর পর্যটক দানুর সঙ্গে ওই ৫ অভিযাত্রী ট্রেকিংয়ে বেরোন। জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঙ্গে ছিলেন আরও ৪ জন কিন্তু ২০ অক্টোবর আচমকা আবহাওয়া বিগড়োলে, তুষারধসের মধ্যে পড়েন তাঁরা। তাতে ওই ৪ জন গুরুতর আহত হন। কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে সমতলে এসে পোঁছন তাঁরা। ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের কথা স্থানীয়দের জানান।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, বরফে চাপা পড়েই মৃত্যু হয়েছে ওই ৫ বাঙালি পর্যটকের। হেলিকপ্টারে চাপিয়ে তাঁদের দেহ কপকোটে নিয়ে আসা হয়। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। উত্তরাখণ্ড সরকারের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য থেকে যাওয়া অভিযাত্রীদের দেহ ফেরানোর দায়িত্ব নিয়েছে নবান্ন।
এর আগে, সোমবার সকালেই কলকাতায় ফেরানো হয়েছে রাজ্যের ৫ অভিযাত্রীর দেহ। উৎসবের আবহে ছুটি উপভোগ করতে উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির ফলে উত্তরাখণ্ডে দুর্যোগ নেমে এলে, তার বলি হন অভিযাত্রীরাও। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে । পড়শি রাজ্য হিমাচল প্রদেশেও বেশ কয়েক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও নিখোঁজ ১৪ জন। সবমিলিয়ে মৃত্যুসংখ্যা ১০০ তে পৌঁছে যাবে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।