কলকাতা ব্যুরো : চলতি সপ্তাহে অমিত শাহের এরাজ্যে সফরকে বাংলায় আইন-শৃংখলার হাতে গরম পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বুঝে নেওয়ার চেষ্টা বলে দাবি করলো বিজেপি। একসঙ্গে সংগঠনের বিস্তৃতিতে অমিত শাহের এই শহরে বিজেপির ছাতার তলায় বড় কোন মাথার যোগ হতে পারে কিনা সেই জল্পনা গ্রিল শুরু করেছে। দুদিনের সফরে এ রাজ্যে এসে ৫ নভেম্বর বাঁকুড়ায় বৈঠক করবেন অমিত শাহ। পরেরদিনই তার কলকাতায় সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা। মাওবাদীদের হটিয়ে একসময় জঙ্গলমহলে ঘাস ফুলের চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন এক তরুণ তুর্কি নেতা। যদিও তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে যত দিন গিয়েছে, ততোই নতুন করে ক্ষোভ বেড়েছে জঙ্গলমহলে শাসকের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এই সফরে শাসকদলের হেভিওয়েট কয়েকজনের দলবদল করার সম্ভাবনা নিয়ে এখন প্রবল চর্চা রাজ্য রাজনীতি তে। যদিও শাসক দলের তরফে এ ব্যাপারে তেমন কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। যদিও বিজেপির কিছু নেতা আকার-ইঙ্গিতে চমকের জল্পনা বাড়িয়ে চলেছেন।
আগামী বছর বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে গোটা রাজ্যকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করেছে বিজেপি। সাংগঠনিকভাবে একেকটি ভাগের বৈঠক করা হবে। ইতিমধ্যেই শিলিগুড়িতে প্রথমভাগে বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। এ সপ্তাহের আরো দুটি জোনের সাংগঠনিক বৈঠক এর নেতৃত্ব দেবেন শাহ।
আগামী বিধানসভা ভোটে রাজ্যে জয় পাওয়ার চেষ্টায় মরিয়া বিজেপির অন্যতম পাখির চোখ জঙ্গলমহল। তাই জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে বাড়তি গুরুত্ব দিতেসেখানে একটি জোন তৈরি করেছে কেন্দ্রের শাসক দল।
কথা ছিল পুজোর আগেই আসবেন শাহ। কিন্তু সময় মেলেনি। তাই কালীপুজোর আগে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী ৫ ও ৬ নভেম্বর বৈঠক করবেন তিনি। যদিও রাজ্য বিজেপির আগের ঘোষণা অনুযায়ী, ৬ এবং ৭ নভেম্বর বর্ধমান এবং মেদিনীপুরে বৈঠক করার কথা ছিল সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা র। কিন্তু পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জানিয়ে দেয় এবার আসছেন অমিত শাহ।
গত ২৯ অক্টোবর শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেসময় তিনি ঘোষণা করেছিলেন দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু হয়ে যাবে। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক জলঘোলা হয়েছিল ।
নাদ্দার আগে অমিত শাহ যখন সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন, সেই সময় থেকেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির শাসন প্রতিষ্ঠা করা তার লক্ষ্য ছিল। রাজ্য বিজেপি নেতাদের মতে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরেও বারবার সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন অমিত শাহ। এবার বিভিন্ন অঞ্চলে নেতাদের সঙ্গে দেখা করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য রণকৌশল তৈরি করতে চাইছেন তিনি। একইসঙ্গে বিজেপির দাবি, প্রতিদিন এ রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও বিজেপি কর্মীদের হেনস্তার যে অভিযোগ কেন্দ্রের কাছে জমা পড়ছে, তার বাস্তব উপলব্ধিও করতে মাঠে নেমে দেখতে চান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।