কলকাতা ব্যুরো: যুব সমাজকে সামলানোর জন্য রাজ্য পুলিশ প্রশিক্ষিত নয়। সে কারণেই পুলিশ প্রথম থেকে লাঠিচার্জ করছে শান্তিপূর্ণ মিছিলে। অভিযোগকারী বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন বিজেপির নবান্ন অভিযান এর পরে দলীয় দপ্তরে বসে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, পুলিশ নির্মমভাবে বিজেপি কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। তাদের প্রাণে মারার জন্য হামলা করেছে বলেও অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সভাপতির।
বিজেপি যুব মোর্চা এদিনের এই মিছিলের উদ্যোগ নিয়েছিল। সে কারণেই এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য। তিনি অভিযোগ করেন, মিছিলে জলকামান থেকে রাসায়নিক রং ব্যবহার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে তার বক্তব্য, বাংলার অন্ধকার সরিয়ে সূর্যের উদয় হবেই।
প্রসঙ্গত এরাজ্যে এই প্রথম কোন বিক্ষোভ কর্মসূচি সামাল দিতে জলকামান থেকে রঙিন জল স্প্রে করা হলো। ফলে সেই রং যাদের গায়ে লাগে তাদের গা পুরো নীল রঙে ভরে যায়। এদিন তেজস্বীর বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। পুলিশ ও তৃণমূলের গুন্ডারা একসঙ্গে মিছিলে হামলা চালিয়েছে। হাজারের উপর বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন।
এদিন দুপুরে যখন বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে হাওড়া এবং কলকাতায় পুলিশের দফায় দফায় খন্ড যুদ্ধ চলছে, সে সময় ঝারগ্রাম সফর শেষে কলকাতা ঢোকার মুখে নবান্নে হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু লিফটে উপরে ওঠার আগেই তিনি ফের বেরিয়ে যান। এদিন সকাল থেকেই নবান্ন স্যানিটাইজ করার জন্য আগাম ঘোষণায় বন্ধ ছিল ফলে নবান্ন।
উপস্থিত হননি মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব থেকে অন্য কোন শীর্ষকর্তা। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী ঢুকে পড়েন ভবানী ভবনে। সেখানকার কন্ট্রোল রুম থেকে তখন গোটা ঘটনা নজরদারি করছিলেন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ডিজি ও রাজ্যের পদস্থ আমলারা। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী তাদের সঙ্গে সামান্য কিছু সময় কথা বলে গোটা পরিস্থিতির হাল হকিকত বুঝে নেন।
তার বেরিয়ে যাওয়ার কিছু সময় পরেই মুখ্য সচিব সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, বিজেপিকে মিছিল করার কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেননা মহামারীর মধ্যে এবং করোনা আবহে সংক্রমণ আশঙ্কাতেই এমন মিছিল করা এখন বেআইনি। তার অভিযোগ, মারমুখী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ইটের আঘাতে কলকাতা এবং হাওড়ায় বহু পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জলকামান হোলিতে ব্যবহৃত রং স্প্রে করা হয়েছিল হামলাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য। এরমধ্যে কোন রাসায়নিক নেই।
বিজেপিকে মিছিল করতে অনুমতি না দেওয়া হলেও, তাহলে কিসের ভিত্তিতে এ দিন তৃণমূলের মহিলা সংগঠনকে মিছিলে অনুমতি দেওয়া হল? এ প্রসঙ্গে মুখ্যসচিবের যুক্তি, বিজেপির চারটি মিছিল ২৫ হাজার করে লোকজন হবে বলে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল। কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে কিছু লোক জড়ো করার কথা বলা হয়েছিল। মুখ্যসচিবের যুক্তি অনুযায়ী, এক লক্ষ লোক জড়ো হওয়ায় মহামারী আইনে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু যদি কিছু লোক মিছিল করবে বলা হত, সে ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়ায় বাধা ছিল না।