কলকাতা ব্যুরো: হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় যাবেন না। এই মর্মে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে চিঠি পাঠালো কাঁথি থানা। পাশাপাশি রবিবার সকাল থেকেই তাঁর বাড়ির সামনে মোতায়েন রয়েছে পুলিশও। এদিনই কলকাতায় যাওয়ার পথে গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বিজেপি বিধায়কের। কিন্তু সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। শনিবার টুইট করে হাওড়ায় যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ কিন্তু পুলিসি বাধায় রবিবার নিজের জেলা থেকেই বেরতে পারলেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা৷ রবিবার রাধামণি হাইরোডে শুভেন্দুর গাড়ি আটকায় পুলিস। বিরোধী দলনেতাকে গাড়ি নিয়ে এগোতে বারণ করে৷ এদিকে পুলিসের কথা শুনেই রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন শুভেন্দু ৷ তিনি জানান, কোলাঘাট গেস্ট হাউসে যাচ্ছেন৷ তবে কেন রাধামণিতে তাঁকে আটকানো হলো? এখানে তো কোনও ১৪৪ ধারা নেই।
এদিন সকাল থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বাড়ির সামনে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। বেলা বাড়তেই কাঁথি থানার তরফে পাঠানো হয় নোটিস। পাশাপাশি, শুভেন্দুর নিরাপত্তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশ রয়েছে। সে কথাও চিঠিতে মনে করিয়ে দিয়েছে পুলিশ। শুভেন্দু কী করবেন, তা অবশ্য এখনও অজানা। বিজেপি বিধায়কের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে নিজের বাড়ি থেকে বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দার বাড়ি যাবেন শুভেন্দু। সেখানকার পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রওনা দেবেন কলকাতার উদ্দেশ্যে। কলকাতায় তাঁর কর্মসূচি রয়েছে। কলকাতায় আসার পথে হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার হয়ে আসার কথা ছিল তাঁর। উলুবেরিয়া যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তা আর সম্ভব হলো না।
তবে এদিন মেদিনীপুর থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ দেবাংশুর। বললেন, সাম্প্রদায়িক শুভেন্দু অধিকারীকে বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া উচিত নয়।” শুভেন্দুকে তমলুকে বাধা দেওয়ার ঘটনায় বললেন, “নিশ্চয়ই দাঙ্গা লাগাতে গিয়েছিল।” রবিবার মেদিনীপুরে ফ্যামের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। সেখানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে হাওড়া যাওয়ার পথে তমলুকে আটকে দেওয়া প্রসঙ্গে দেবাংশু বলেন, শুভেন্দু অধিকারী নিশ্চয়ই দাঙ্গা লাগাতে গিয়েছিল, তাই প্রশাসন আটকেছে। প্রশাসন ভাল কাজ করেছে।
তারপরই তিনি আরও বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর মতো একটা সাম্প্রদায়িক লোককে বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়াটাই উচিত নয়। অসমের তিনসুকিয়ায় যখন বাঙালিরা খুন হয়, তখন তৃণমূল গেলে তাদের আটকানো হয়। দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী, হাথরসে আটকানো হয়। কিন্তু ওরা এরাজ্যে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
গত কয়েকদিন ধরেই অশান্তির আগুনে পুড়ছে হাওড়ার কিছু এলাকা। শনিবারই সেখানকার অগ্নিদগ্ধ দলীয় কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালরা। কিন্তু বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে আটকে দেওয়া হয়। এমনকী, হাওড়ায় পৌঁছনোর আগে তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। এবার শুভেন্দু অধিকারীকেও আটকাল রাজ্য পুলিশ।