কলকাতা ব্যুরো: নদিয়ার গয়েশপুরে কর্মিসভার সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ বলে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এবার তাঁর সেই মানহানিকর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সমন পাঠাল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় আইনজীবী সুরজিৎ রায়চৌধুরীর আবেদন নিয়ে সোমবার সমন ইস্যু করলেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের ১০ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আগামী ১৪ জুলাই তাঁকে আদালতে হাজির হতে হবে।
২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর নদিয়ার গয়েশপুরের জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে সাংবাদিককুলকে ‘দুই পয়সার সাংবাদিক’ বলে অপমান করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর এই মন্তব্য যথেষ্ট মানহানিকর অপমানজনক মনে করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে ক্ষমা চাইতে আইনি নোটিস দেন আইনজীবী সুরজিৎ রায় চৌধুরী ও অজিৎ কুমার মিশ্র। আইনজীবীরা জানান, তিনি এই মানহানিকর ও অসম্মানজনক বক্তব্যের পর একটিবারও ক্ষমা চাননি। উপরন্তু আরও অপমান উগড়ে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাই সাংসদের বিরুদ্ধে এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
সেসময় গয়েশপুরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বৈঠকের বেশ কয়েকটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, তিনি মোবাইল ক্যামেরায় সাংবাদিকদের ভিডিও করতে বারণ করছেন। এক সাংবাদিককে বেরিয়ে যাওয়ার কথাও বলতে শোনা গিয়েছে সাংসদকে। ভাইরাল হওয়া আরেকটি ভিডিওতে সংবাদমাধ্যমকে ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ বলে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে। তাঁর এই মন্তব্য নিয়েই বিভিন্ন মহলে ওঠে সমালোচনার ঝড়।
কলকাতা প্রেস ক্লাবের তরফে ওই মন্তব্যের নিন্দা করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। তবে তারপরেও দুঃখপ্রকাশ দূর অস্ত বরং টুইটে আরও ডাকাবুকো মনোভাবের পরিচয়ই দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। লিখেছিলেন, আই অ্যাপোলোজাইজ ফর দ্য মিন হার্টফুল অ্যাকিউরেট থিংস আই সেড। যার বাংলা তর্জমা করলে হয়, “নিম্নমানের দুঃখজনক সঠিক কথা বলার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী অর্থাৎ ‘সঠিক’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ।
এরপরই মহুয়াকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন আইনজীবী স্বরোজিত রায়চৌধুরী। ক্ষমা না চাইলে মানহানির মামলা দায়েরের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। সেইমতো আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে এবার মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে সমন জারি করল ব্যাঙ্কশাল আদালত।