এক নজরে

বাইরে থেকে তালা দিয়ে এক ঘরে করলো প্রতিবেশী

By admin

September 04, 2020

কলকাতা ব্যুরো: চরম অমানবিকতার উদাহরণ রাখলেন এক যুবক। তিনি যে আবাসনে বাস করেন, তার উপরের ফ্ল্যাটে এক পরিবারের দুজনের করোনা ধরা পড়েছে। তাদের একজন রয়েছেন হাসপাতালে। অন্যজন চিকিৎসকের পরমর্শমতো মতো হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।

কিন্তু যাঁদের করোনা ধরা পড়েছে তাদের অচ্ছুৎ করে রাখতে হবে তো, এই ভাবনা থেকেই হয়তো চুপি চুপি রাতের অন্ধকারে উপরে উঠে সেই ফ্লাটে তালা দিয়ে আবার ফিরে গিয়েছিলেন নিজের ঘরে। সেই যুবক পেশায় নাকি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। অথচ তিনি একটা পরিবারকে এই বিপদের সময় একঘরে করে রাখার জন্য চরম কৌশল নিলেন। কিন্তু তার শেষ রক্ষা হলো না। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে গেলেন সেই বীরপুঙ্গব।

ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটির কেষ্টপুর এলাকায় চিত্রকুট ধাম আবাসনে। এদিন ভোরবেলায় উঠে মিলন কান্তি দাস বুঝতে পারেন তার দরজা বাইরে থেকে লক করা রয়েছে। জল দেওয়ার জন্য লোক এসেও দরজা বন্ধ থাকায় ফিরে যায়। এর পরেই তিনি ফোন করেন বাগুইআটি থানায়। পুলিশ আসে, নিরাপত্তারক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপরেই সিসিটিভির ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়, সেই অমানবিক যুবককে।

প্রায় আট ঘণ্টা পর তালা খুলে ওই পরিবারকে পুলিশ উদ্ধার করে। এখনও ওই যুবককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এমন ঘটনায় হতচকিত শহরের নাগরিক সমাজ।বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে বহু মানুষ ব্যক্তিগতভাবে যেখানে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, সেখানে এই যুবকের আচরণ কতটা মানুষের মতো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওই বাড়ির মালিক মিলন কান্তি বাবু কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, লকডাউন এর মধ্যেই করোনা আক্রান্তকে কলকাতা থেকে আসানসোলে পৌঁছে দিয়ে নিজে বাড়ি এসে আলাদা থেকেছি। আম্পানের পরে সুন্দরবনের মানুষকে সাহায্য করতে সেখানে গিয়েছিলাম। আর আজ আমার পরিবারকে একঘরে করতে প্রতিবেশীর এহেন আচরণ! অন্যান্য প্রতিবেশীরাও এমন একজন মানুষকে এরপরেও আবাসনে থাকতে দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে এখন আলোচনা শুরু করেছেন।