কলকাতা ব্যুরো: অসমের দারাং জেলার গরুখুটি এলাকায় পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযুক্ত চিত্রগ্রাহককে গ্রেফতার করল অসম পুলিশ ৷
প্রসঙ্গত, বেআইনি দখল উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল অসমের দারাং জেলার গরুখুটি এলাকা। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই এলাকাবাসীর মৃত্যুর হয়। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে অন্য বিতর্কও ৷ ঘটনাস্থলের যে ভিডিও গতকাল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেখানে দেখা গিয়েছিল, মাটিতে পড়ে থাকা এক ব্যক্তির মৃতদেহের উপর উঠে লাফাচ্ছেন, তাঁকে আঘাত করছেন একজন চিত্রগ্রাহক ৷ এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। অভিযুক্ত চিত্রগ্রাহককে গ্রেফতারের দাবি ওঠতে শুরু করে বিভিন্ন মহলে ৷

শুক্রবার অসম পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিজয় বানিয়া নামে অভিযুক্ত ওই চিত্রগ্রাহককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনের তরফেই ওই চিত্রগ্রাহককে নিয়োগ করা হয়েছিল উচ্ছেদ অভিযান পর্বের ছবি তুলে রাখার জন্য।
অসমের ডিজিপি ভাষ্কর জ্যোতি মহন্ত জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারই বিজয় বানিয়া নামে অভিযুক্ত ওই চিত্রগ্রাহককে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই চিত্রগ্রাহক কেন এমন অমানবিক আচরণ করলেন তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

ইতিমধ্যেই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অসম সরকার। বৃহস্পতিবার বেআইনি দখল উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা নেয় দারাংয়ের ঢালপুর এলাকা ৷ পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যে, পুলিশকে গুলি চালাতে হয় ৷ এতে মারা গিয়েছেন ২ জন স্থানীয় মানুষ, আহত হয়েছেন বহু নিরাপত্তারক্ষী ৷
একটি বিবৃতিতে অসম সরকার জানিয়েছে, গুয়াহাটি হাইকোর্ট-এর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে এই ঘটনার তদন্ত করা হবে ৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১-এ দারাং জেলার ঢালপুর অঞ্চলে শিপাজহার রেভিনিউ সার্কেলে পুলিশের গুলি চালনার ঘটনায় বহু লোক আহত হয়েছেন এবং দু’জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে ৷ স্বরাষ্ট্র দফতর এই ঘটনায় একটি তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷
দারাংয়ের পুলিশ সুপার সুশান্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর পর তাদের লক্ষ্য করে জনতা ইট ছুড়তে থাকে ৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ৯ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন ৷ প্রসঙ্গত, ঢালপুর এক নম্বর ও দুই নম্বর এলাকার প্রায় ৭৭ হাজার ৪২০ বিঘা জমি রয়েছে সরকারের ৷ প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে ওই বিস্তীর্ণ এলাকা বেআইনিভাবে দখল হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ ৷ এই বেআইনি দখল উচ্ছেদ করতে বৃহস্পতিবার অভিযানে নামে অসম পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী ৷ আগেও এমন অভিযান চালিয়েছিল তারা ৷