কলকাতা ব্যুরো: জল্পনাই সত্যি হল ৷ মুক্তি পেলেন না শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান ৷ তাঁকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত এনসিবি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল মুম্বইয়ের এসপ্ল্যানেড আদালত। ওই দিন পর্যন্ত হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচাকেও ৷
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে মুম্বইয়ের কাছে আরব সাগরে ভাসমান এক প্রমোদ তরী থেকে আটক করা হয় শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানকে। রেভ পার্টিতে মাদক সেবনের অপরাধে আটক করা হয় তাঁকে। তারপর টানা ১৬ ঘণ্টা জেরার পর রবিবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় আরিয়ান ও তাঁর দুই বন্ধুকে।
সোমবার ফের একবার আদালতে হাজির হন আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচাকে। আদালতের তরফে তিন অভিযুক্তকেই ৭ অক্টোবর অবধি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া দয়েছে। ইতিমধ্যে সোমবার সকালেই ধৃতদের মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। সঙ্গে করোনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে সোয়াব স্যাম্পেলও।
এদিন আদালতে আরিয়ান, আরবাজ ও মুনমুন ছাড়াও আরও ৬ ধৃতকে হাজির করা হয়েছে। যার মধ্যে একজন গ্রেফতার হয়েছেন আজ সকালেই। ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার সময় তাঁর কাছ থেকে বেশ ভালো পরিমাণ মাদক উদ্ধার হয়েছে বলেই আদালতকে জানিয়েছেনঅ্যাডিশনাল সলিসিটার জেনারেল অনিল সিং।
আদালতের কাছে অনিল সিং জানান, ‘এনসিবি-এর পক্ষ থেকে আরিয়ানের ফোন আটক করা হয়েছে। সেখানে অনেক সন্দেহজনক চ্যাট আছে যা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে মাদক ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আরিয়ানের। তাই সকলকে একসঙ্গে বসিয়ে এনসিবি-এর দফতরে জেরা করা খুব দরকার।’
অনিল জানান, হোয়াটস অ্যাপ চাটের থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, টাকা-পয়সা লেনদেনের কথাও হয়েছে সেখানে। এমনকী, বিদেশেও টাকা পাঠানো হয়েছে। সিং আদালতকে জানান, আরিয়ানের বিরুদ্ধে পাওয়া সব প্রমাণ NDPS অ্যাক্ট অনুসারে শাস্তিযোগ্য ও রিয়া চক্রবর্তীর কেস অনুসারে জামিন অযোগ্য অপরাধ। অভিযুক্তদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা খুব প্রয়োজন। কারণ, চ্যাট থেকে বেশ কিছু সাংকেতিক নাম পাওয়া গিয়েছে, যা মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে চ্যাট করার সময় ব্যবহরা করা হত।
অন্যদিকে, আরিয়ানের পক্ষ থেকে আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে জানান, ‘ধৃতদের মধ্যে একমাত্র আরবাজকে আমি চিনি। যার কাছ থেকে ৬ গ্রাম চারস উদ্ধার হয়েছে। বাদবাকি কেউ আমার চেনা নয়। এজেন্সি কেবলমাত্র হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের ওপর ভিত্তি করতে পারে না। আমার বা আমার আশেপাশের কারও থেকে এর বেশি কিছু পাওয়া যায়নি।’
আরিয়ানের পক্ষ থেকে এদিন সতীশ মানশিন্ডে আরও জানান, তাঁর সঙ্গে কোনও মাদক পাচারকারী বা কোনও এই ধরনের সংস্থার যোগাযোগ নেই। এমনকী, আরিয়ানের ব্যাগ থেকেও কিছু উদ্ধার হয়নি। নিষিদ্ধ বস্তু হিসেবে যেগুলো ধার্য করা করা হয় যেমন চারস বা এমডি আমার বা আমার বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। আরবাজের কাছ থেকে যা পাওয়া গিয়েছে তা সামান্য।
আরিয়ানের তরফ থেকে মানশিন্ডে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ যে চ্যাটের কথা বলা হচ্ছে তা তখনকার যখন তিনি বিদেশে ছিলেন এবং তাঁকে ভয় দেখানো হচ্ছিল আন্তর্জাতিক মাদক পাচার নিয়ে। সেই ট্রিপে তিনি কোনও মাদক নেননি পা কোনও ড্রাগ ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলেই দাবি করেছেন আরিয়ান।
যদিও দু’পক্ষের বয়ান শুনে প্রমোদতরীতে মাদক মামলায় ৭ অক্টোবর অবধি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এবার তদন্ত করে দেখা হবে, ঠিক কার কার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন আরিয়ান খান ও তাঁর বন্ধুরা।