কলকাতা ব্যুরো: করোনা পরিস্থিতিতে পুরভোট নিয়ে চাপানউতোর চলছে ৷ তবে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাকি ১০৮টি পুরসভায় নির্বাচন হতে চলেছে ৷ বৃহস্পতিবার ২০টি জেলার জেলাশাসক ও এসপি-দের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। বৃহস্পতিবারই হয়তো বিজ্ঞপ্তি জারি করে চূড়ান্ত দিনক্ষণ জানিয়ে দেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ তার আগে বুধবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল কমিশন ৷ সেখানে শাসকদল ছাড়া বাকি রাজনৈতিক দলগুলি একদিনে ভোটগণনার দাবি জানিয়েছে অর্থাৎ, ১২ ফেব্রুয়ারি যে ৪ পুরনিগমের ভোট রয়েছে ও বাকি ১০৮টি পুরসভার ভোটগণনা একইদিনে করার পক্ষে বিরোধী দলগুলি ৷
বুধবার সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন তাপস রায় ও দেবাশিস কুমার। সিপিএম-এর প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন রবীন দেব। সিপিআই থেকে প্রবীর দেব ও গৌতম রায়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ছিলেন অসিত মিত্র ও আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় এবং বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অগ্নিমিত্রা পল ও শিশির বাজোরিয়া।
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাপস রায় বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নেওয়া সমস্ত ব্যবস্থায় দল সমর্থন জানাবে। তবে নির্বাচনী প্রচারের সময় আরও ১ ঘন্টা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছি।
প্রচারের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করা হয় সিপিএম-এর পক্ষ থেকেও ৷ বৈঠকে রবীন দেব বলেন, দুই নির্বাচনের গণনা একইদিনে করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রার্থীদের উপর যেন কোনওরকম জোর জুলুম করা না হয়। প্রচারের সময়সীমা সকাল আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত করা হোক ৷ পাশাপাশি হাওড়া পুরসভার নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ ২০১৩ সাল থেকে হাওড়ায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে আজকের বৈঠকে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানায় কংগ্রেস ৷ অসিত মিত্র বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন করানো সম্ভব নয়।
আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কমিশনের তরফে বলা হয়েছে সীমান্ত সিল করা হয় হচ্ছে । তবে আদতে কি সীমান্ত সিল করা হচ্ছে? এ কথা সত্যি নয়। সাইলেন্স পিরিয়ড ৭২ থেকে কমিয়ে ৪৮ ঘণ্টা করতে হবে। আর হাওড়া নির্বাচনই বা কবে হবে? তাঁর অভিযোগ, ১২ ফেব্রুয়ারি ৪ পুরনিগমের নির্বাচনে রি পোলিংয়ের কোনও সুযোগ নেই । আদর্শ আচরণ বিধি মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
একইদিনে ভোটগণনার দাবি ছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে ফের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানায় বিজেপি৷ শিশির বাজোরিয়া বলেন, তিনদিন আগে সংক্রমণ নিয়ে আমরা কমিশনে চিঠি দিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। আজ আবারও জানিয়েছি। দুই দফায় নির্বাচন হলেও গণনা যাতে একই দিনের হয় সেই বিষয়টিও আমরা উল্লেখ করেছি।
করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে করোনা বিধিনিষেধ অনেকেই শিথিল করা হয়েছে। সেইমতো আজ থেকে খোলা জায়গায় মিটিংয়ের ক্ষেত্রে ৫০০ জন থাকতে পারে। পাশাপাশি অডিটোরিয়ামের ক্ষেত্রে ২০০ জনের প্রবেশে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৷