কলকাতা ব্যুরো: সরকারি কর্মচারিরা শুনছেন!
মহারাষ্ট্রের এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কর্তব্য পালনে দূরত্ব বাধা হয়নি।
তাঁর লোকাল ট্রেন লাগেনি। বাস নেই অজুহাতে কাজ বাদ দিয়ে বসে থাকতে হয়নি।
মাস গেলে মাইনে ৭০০০ টাকা।
তাতে সংসারের ক্ষুন্নিবৃত্তিই চলে না।
সেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী কিনা ভাড়া করে বসলেন জেলে নৌকা।
১৮ কিলোমিটার নদীপথ নিজেই দাঁড় বেয়ে প্রত্যন্ত দুই গ্রামে পৌঁছে যেতেন মহারাষ্ট্রের নন্দুরবর জেলার দুই অখ্যাত গ্রাম আলিঘট এবং দাদারে।
এমন নয় যে ওই দুই গ্রামে যাওয়া ২৭ বছর বয়সি ওই তরুণী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর বাধ্যতামূলক।
তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বসে থাকলেই পারতেন। কিন্তু তাহলে ওই গ্রামের শিশুরা পুষ্টিকর খাবার পেত না, প্রসূতিদের প্রয়োজনীয় ওষুধ জুটত না। লকডাউনে সমস্ত পরিবহণ বন্ধ থাকায় ওই দুই গ্রামের শিশু, প্রসূতিদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যাওয়ার উপায় ছিল না। তাছাড়া করোনা আতঙ্কে ওই দুই গ্রামের কেউ বাইরে যেতেন না।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রেলু ভাসাভে তাই নিজেই নৌকা বেয়ে পৌঁছে যেতেন ওই দুই গাঁয়ে। তাঁর অক্লান্ত পরিষেবায় এইসময়ে ২৫ জন নবজাতক ও সাতজন আসন্নপ্রসবা যথাযথ চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাবার পেয়েছে।
নৌকায় ওষুধ, পুষ্টিকর খাদ্য, শিশুদের ওজন মাপার মেশিন নিয়ে ওই তরুণী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী পৌঁছে যেতেন গ্রামে। ফিরতে ফিরতে সেই সন্ধ্যা।
রেলুর তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল না।
তরুণীর একমাত্র চিন্তা ছিল, তিনি না গেলে এতগুলো শিশু ও অন্তঃসত্ত্বারা যে পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবেন।
সামান্য বেতনের এক কর্মীর এই কর্তব্যবোধ দেখে কেউ অনুপ্রাণিত হবেন কি?