এক নজরে

হোয়াইট হাউসের গদি নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে : হারজিত হবে সম্ভবত সরু সুতোর ব্যবধানে

By admin

November 05, 2020

কলকাতা ব্যুরো : মার্কিন মুলুকে হার-জিতের ব্যবধান হতে চলেছে সরু সুতোর ব্যবধানে। কাল রাত থেকে আজ ভোর পর্যন্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে কে হোয়াইট হাউসের মসনদে বসবেন তা এখনো সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে ফলাফল বেরোলে সমস্যা সহজে মিটবে না। পুনর্গঠন এর দাবি উঠতে পারে। লড়াই যেতে পারে আদালত পর্যন্ত। সমীক্ষা বলেছিল ভোট শতাংশে বাইডেন এগিয়ে থাকবেন। বিশেষ ভুল না হলে বাইডেন সেখানে অনেক জায়গাতেই এগিয়ে আছেন। রাত দুটো পর্যন্ত তাজা খবর অনুযায়ী শতাংশের ব্যবধান বাড়িয়ে আপাতত ২ শতাংশ ভোটে এগিয়ে বাইডেন। তবে অক্টোবর মাসের সমীক্ষায় যেমনটা বলা হয়েছিল ঠিক তেমনটা যে ঘটবে না সে কথা অন্তত বলা যায়। কোন নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলে ভোট শতাংশ আর আসনের সম্পর্ক অনেকটাই গুলিয়ে যেতে পারে। দেশজুড়ে ভোট শতাংশে এগিয়ে থাকলেও লাভ নেই বরং কম ব্যবধানে একেকটি রাজ্য জিতে নিয়ে সেখানকার আসন বগলদাবা করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখনো পুরো বিষয়টা পরিষ্কার না হলেও যে কটি রাজ্যে লড়াই বেশি প্রভাব সেটা বুঝতে কোন অসুবিধা নেই। রাজ্য গুলো হল জর্জিয়া ১৬ মিশিগান নেভাদা ৬ নর্থ ক্যারোলিনা ১৫ ও পেনসিলভেনিয়া । এগুলো বাদে বাইডেন এগিয়ে ২৪৮ টি তে। এখনো ২১৪ তে আটকে আছেন ট্রাম্প। সঠিক ফল জানতে বেশ কিছুটা সময় বাকি। তবে লড়াই চলা রাজ্য গুলোর দিকে তাকিয়ে বাইডেনের যে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বেশি সে কথা বলা বাহুল্য। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে ট্রাম্পের জেতার আশা ক্ষীণ। বিশেষ করে অ্যারিজোনার ১১ আর উইসকনসিনের ১০ টা আসন চলে যাওয়ায় বাইডেনের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়েছে। হিসেব ঠিকমত হলে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জেতা হারার ফল নির্ধারিত হতে যাচ্ছে মিশিগানের আর নেভাডায়।মিশিগানের ১৬ আর নেভাদার ৬ মিলে হয় ২২। এই দুই রাজ্যে ভালোই এগোচ্ছে বাইডেন। ২৪৮ এর সঙ্গে ২২ যোগ করে পাওয়া যাবে ২৭০। গদিতে বসার ম্যাজিক ফিগার। বাকি সব আসন ট্রাম্প পেয়ে গেলেও পৌঁছাবেন ২৬৮ তে। অর্থাৎ ফলাফল দাঁড়াবে বাইডেন ২৭০ আর ট্রাম্প ২৬৮। শুধু আমেরিকা নয় সম্ভবত বিশ্ব ইতিহাসে এমন ফল নজিরবিহীন।

আমেরিকার অনেক রাজ্য আছে যেখানে ভোট না হলেও চলে। তারা সবসময়ই রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ভোট দেন। তাদের নিয়ে আলোচনা না করাই ভালো। অন্যদিকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সেই সব রাজ্য যেখানে সামান্য ব্যবধানে জয় পরাজয় নির্ধারিত হয়। এইগুলি সুইং টেস্টে কোন দিকে যাবেন তার ওপরই সামগ্রিক ভোটের ফলাফল নির্ভর করবে। বেশি ভোট পেলেও কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়া যায়না। তাহলে গতবার হিলারি ক্লিনটন মসনদে বসতেন। কিন্তু সিকি কোটির বেশি ভোট পেয়েও তিনি হরেন আসনের হিসেবে। এবারও সেই একই কথা। সেই কারণেই সমীক্ষা বলছিল ২ শতাংশের মতো ভোটে এগিয়ে থাকলেও তিনি একেবারেই নিশ্চিত নন। কারণ কম ভোট পেয়েও হিসেব করে কয়েকটি রাজ্যে জিতে গেলেই রিপাবলিকানদের জয় হবে। ৩ – ৪ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থাকলেও আসনের হিসেবে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হতে চলেছে।

একইসঙ্গে খবর পাওয়া যাচ্ছে ভোট গণনা নিয়ে বেশ অশান্তি হবে। ভোটের সম্পূর্ণ ফলাফল আস্তে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। বিষয়টা বেশ জটিল। কারণ গণনা শুরুর দিনের রাত বারোটা পার হলেও জেগেছিল ২ যুযুধান পক্ষ। গভীর রাতে টুইট করে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা অনেক জায়গায় ভোট দিচ্ছেন। এটাকে তিনি ভোট চুরি আখ্যা দিয়েছেন। পাশাপাশি মাঝরাতে ঘোষণা করেছেন তিনি জিতেছেন। একইসঙ্গে অবশ্য ভোট গণনা বন্ধের দাবিতে আদালতে যাবার হুমকি দিয়েছেন।

কোভিড ঠেকাতে ব্যর্থতা, বেকারত্ব, কালো মানুষের প্রতি অবিচার, এই ইসুগুলোই পিছিয়ে রেখেছে ট্রাম্পকে। ভোটের আগে জনগণের কাছে কোভিদের প্রতিষেধক পৌঁছে দিতে পারলে হয়তো অনেকটা সুরাহা হতো। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। ফলে খুব সোজা ভাবে ভাবতে গেলে ট্রাম্পের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সমীক্ষা গত দুমাস ধরে সে কথাই বলে আসছিল। কিন্তু একেবারে শেষের দিকে লড়াই হল হাড্ডাহাড্ডি। তবে হেরে গেলেও নির্বাচনী ফলাফল না মেনে নেওয়ার যে রেওয়াজ তৃতীয় বিশ্বে আছে তার ছোঁয়া আমেরিকাতেও লাগতে চলেছে। হেরে গেলে নাকি হোয়াইট হাউস না ছেড়ে আইনি লড়াইয়ে যাবেন ট্রাম্প এরকম কথা শোনা যাচ্ছে মার্কিন দেশে। আপাতত খেলাটা শুধু সংখ্যার।