কলকাতা ব্যুরো: হাইকোর্টে স্বস্তি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। CAT-এর মামলা কলকাতায় ফেরানোর নির্দেশ দিল হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের পূজাবকাশকালীন বেঞ্চ। স্বাভাবিকভাবেই মুখ পুড়লো সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রাইবুনালের।
গত ২৮ মে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কলাইকুণ্ডায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে আলাপনবাবুর ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেখানে পৌঁছান। রাজ্যের তরফে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী দীঘায় ক্ষয়ক্ষতি দেখতে যাওয়া ও বৈঠকের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপরই ১৬ জুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রের কর্মীবর্গ দপ্তর। ১৮ অক্টোবর প্রাথমিক পর্যায়ের শুনানির জন্য তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। পরে তাঁর অনুরোধে সেই শুনানি পিছিয়ে ২ নভেম্বর করা হয়েছে। সেই তদন্ত প্রক্রিয়া খারিজ এবং নিজের দাবিদাওয়া নিয়ে ক্যাট-এর কলকাতা বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন আলাপনবাবু। কিন্তু এ রাজ্যের বেঞ্চে তাঁর আবেদনের শুনানি না করে মামলা দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার আবেদন করে কেন্দ্র। সেই আবেদনে সাড়া দেয় ক্যাটের প্রিন্সিপাল বেঞ্চ। তাদের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে যান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব।
বুধবার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জির শুনানিতে হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নে জর্জরিত হতে হয় কেন্দ্রের আইনজীবীকে। শুনানির শুরু থেকেই কেন্দ্রের আইনজীবীকে আদালতের প্রশ্নবাণের মুখে পড়তে হয়। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, যশ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি, তা নিয়ে আলাপনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করা, সবটাই এ রাজ্য কেন্দ্রিক। তবে কেন সেই মামলার শুনানি দিল্লিতে পাঠানো হল, তা জানতে চান বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, প্রকৃত ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার ওই মামলার রায়ে হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের পূজাবকাশকালীন বেঞ্চ ক্যাট মামলা কলকাতায় ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের রায়ের স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।