কলকাতা ব্যুরো: ১৪ জুনের পর ২৭ সেপ্টেম্বর। সুশান্ত সিং রাজপুত এরপর অক্ষত উৎকর্ষ। বিহারের পাটনার পর মুজাফফরপুর। একজন হইহই করে বলিউডের জমিতে নিজের জায়গা পাকা করছিলেন, একজন সিরিয়াল এবং বিজ্ঞাপনের মডেলিং করে মুম্বাইয়ে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টাই লড়ছিলেন। দুজনেরই বাড়ি আদতে বিহারে। দুজনারই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে মুম্বাইয়ে নিজেদের ফ্ল্যাটেই। দুজনের ক্ষেত্রেই মৃত্যুতে অভিযোগের তীর বান্ধবীর দিকে। সুশান্ত সিং এর ঘটনা আজ সকলের জানা। এবার সামনে আসছে আরেক অভিনেতা অক্ষত উৎকর্ষের অস্বাভাবিক মৃত্যু।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ের আন্ধেরি ওয়েস্ট নিজের ফ্ল্যাটে গলায় দড়ি দিয়ে অক্ষত আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে মুম্বাই পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, মানসিক অবসাদে এবং লকডাউনের মধ্যে কাজ তেমন না পাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন অক্ষত। কিন্তু সেই দাবি মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। তাই গত বৃহস্পতিবার মুজাফফরপুর থানায় ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন কাকা। এক্ষেত্রে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ জানানো হয়েছে অক্ষ তর বান্ধবী শিখা রাজপুত এবং যে আবাসনে তিনি ভাড়া থাকতেন সেই সোসাইটির সম্পাদক সহ তিনজনের বিরুদ্ধে। তারাই ষড়যন্ত্র করে পরিবারের ছেলেকে খুন করেছে বলে অভিযোগ অক্ষতের কাকা বিক্রান্ত কিশোরের।

তাদের দাবি, যেভাবে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের করে বিহার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল, একইভাবে অক্ষতের ক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থা করুক বিহার পুলিশ। মুজাফফরপুর ডিএসপি নাম রাম নরেশ পাশওয়ান অক্ষতের পরিবারের অভিযোগ দায়ের করার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তা নিয়ে তদন্ত কি হবে সে ব্যাপারে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের নির্দেশের অপেক্ষায় থানা রয়েছে বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। এর আগে জুন মাসে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের। প্রথমে এই ঘটনার পিছনে নেটিজেন ইসু সামনে আসে। যদিও তা নিয়ে বিতর্ক, সমালোচনার মধ্যেই জুলাই সুশান্তের বাবা পাটনা সদর থানায় ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনাতেও অভিযুক্ত করা হয়, সুশান্তের বান্ধবী রেহা চক্রবর্তী ও তার পরিবারকে। বহু বিতর্কের পর শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই মামলার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরবর্তীতে এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরাতে এবং সবশেষে মাদক যোগে এখন তদন্ত চালাচ্ছে এনসিবি।

মুম্বাই পুলিশ অক্ষতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে আর্থিক অনটনের যুক্তি দিলেও, তা মানতে নারাজ তার পরিবার। বাবা কিশোর উৎকর্ষ বলেছেন, তাদের আর্থিক কোনো সমস্যা নেই। কেননা বাড়ি থেকে ছেলেকে প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়া হতো। তিনি জানিয়েছেন, ২৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ, ছেলে তাকে ফোন করেছিল। কিছু কথা বলতে চাই বলে জানিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানায়, সোমবার অর্থাৎ পরের দিন সে কথা বলবে। কিন্তু ওই রাতেই তার মৃত্যু হয়।

তার বান্ধবীর বক্তব্য অনুযায়ী, সেদিন রাতে দুজনেই একসঙ্গে খাবার খান। তারপর শুয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ তিনি শৌচাগারে যাওয়ার জন্য উঠে দেখেন, অক্ষত তার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন। তিনিই থানায় খবর দেন। যদিও সুশান্ত মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে সারাদেশে বিহার পুলিশ এবং মুম্বাই পুলিশের মধ্যে যে বিতর্ক বেঁধেছিল, তারপরে এবার বিহার পুলিশ নতুন করে আর বিতর্কে জড়াবে কিনা তা নিয়েই এখন জল্পনা তৈরি হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version