কলকাতা ব্যুরো: একদিকে করোনায় দেশে সবচেয়ে চাপের মুখে গোয়া, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জোড়া ফলায় রবিবার প্রায় ছন্নছাড়া অবস্থা এই ছোট্ট সমুদ্র ঘেরা রাজ্যের। তাওতের নামধারী সুপার সাইক্লোন এর ধাক্কা ইতিমধ্যেই কর্নাটকের ছ জেলায় বিধ্বংসী আকার নিয়েছে। তারপরেই সেই সুপার সাইক্লোন ছুটেছে গোয়ায় তান্ডব দেখাতে। বিকেল থেকে গোয়ার বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। মুষলধারায় বৃষ্টি ও ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ায় এখন কাঁপাচ্ছে দক্ষিণ ভারতের অন্তত মোট ছ টি রাজ্য। আর এর জেরে আগামী বুধবার পর্যন্ত ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে পড়তে পারে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, গোয়া সহ আশপাশের রাজ্যগুলি।তুমুল বাতাস এবং বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই কেরালা, তামিলনাড়ুর বহু এলাকা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। কর্নাটকে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নদী তীরবর্তী এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা গুলি থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সকালের মধ্যে এই প্রবল ঘূর্ণিঝড় মহারাষ্ট্র উপকূল হানা দিতে পারে। ইতিমধ্যেই ১৩ কোম্পানি এনডিআরএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে পুনেতে। কারণ সেখান থেকে আশপাশের এলাকাতেও ক্ষতি হলে দ্রুত টিম পৌঁছতে সুবিধা হবে। মহারাষ্ট্রে সরকার সেনা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলেছে। সর্বত্রই উপকূল রক্ষী বাহিনী রাস্তায় নেমেছে।সর্তকতা জারি করা হয়েছে মুম্বাইতে। এর আগেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মুম্বাইকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল। এই অবস্থায় এবার তাওতের ক্ষতি থেকে বাণিজ্য নগরীকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকার সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারকে। একই সঙ্গে এই রাজ্যগুলিতে যাতে করোনা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে দিল্লি।
ইতিমধ্যেই কেরল, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাত এবং গোয়াসহ মোটা ৬ রাজ্যে উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের এমন অদ্ভুত নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, সাধারণত যে মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকার দেশগুলিই সংশ্লিষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে। সেই নামের তালিকা পাঠানো হয় ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক সংগঠনটির কাছে। সেই মতো বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে উৎপন্ন হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বর্তমানে সংগঠনটির সদস্য-বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা-সহ ১৩টি দেশ। যেমন ভারতের তরফে নামের তালিকা পাঠায় আইএমডি বা মৌসম ভবন।
এবারের ঘূর্ণি ঝড়ের তওতে নামটি মায়ানমারের দেওয়া। মায়ানমার শব্দ ‘গেকো’ থেকেই এসেছে তওতে নামটি। যার মানে উচ্চস্বর যুক্ত টিকটিকি জাতীয় প্রাণী নামে পরিচিত।দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধে নাগাদ গুজরাটের পোরবন্দর ও নালিয়ায় আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়।