কলকাতা ব্যুরো: কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হলো কৌশিক চন্দকে। যে বিচারপতি মাসখানেক আগে নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে গিয়েছিলেন। একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তাঁকে স্থায়ী বিচারপতি করার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, হাইকোর্টের বিচারপতিকে স্থায়ী করার আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মতামত জানতে চাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী যে মত দেন, তাতে অবশ্য বিশেষ কোনও প্রভাব এক্ষেত্রে পরেনি। কারণ বিচারপতি চন্দের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থায়ী না করার ক্ষেত্রে মত দিয়েছিলেন বলে তথ্য উঠে আসে।
এমনিতে গত জুনে নন্দীগ্রামের ভোটের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেছিলেন মমতা। সেই মামলা গিয়েছিল বিচারপতি চন্দের বেঞ্চে। কিন্তু আইনজীবী থাকাকালীন বিজেপির হয়ে একাধিক মামলা লড়ায় বিচারপতি চন্দের বেঞ্চ থেকে মামলা সরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন মমতা। তার বিরুদ্ধে স্বচ্ছতার অভাবের আশংকার কথা জানায় রাজ্য। নিজের আর্জিতে মমতা জানিয়েছিলেন, বিচারপতি চন্দ কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতিও নন। তিনি যে অতিরিক্ত বিচারপতি ছিলেন, তাও নিজের আর্জিতে তুলে ধরেছিলেন মমতা। তাকে স্থায়ী না করার পক্ষে যে রাজ্য মত দিয়েছিল, সে তথ্য তখন প্রকাশ্যে আসে।
সেই আর্জি অবশ্য ধোপে টেকেনি। বিচারপতি চন্দের বেঞ্চেই মামলা রেখে দেওয়া হয়েছিলেন। পরে জুলাইয়ে নিজে থেকেই মামলা থেকে সরে যান বিচারপতি চন্দ।সেইসঙ্গে বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করার দায়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন। যে টাকা রাজ্য বার কাউন্সিলকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তা ব্যবহার করা হবে করোনভাইরাসের চিকিৎসায়। ইতিমধ্যে সেই টাকা জমা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ মে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে গণনার শুরু থেকে নন্দীগ্রামে এগিয়ে ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। পরে কয়েকটি রাউন্ডে এগিয়ে যান মমতাও। শেষের দিকে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি টক্কর হয়। ষোড়শ রাউন্ড পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন মমতা। হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে কী ফলাফল হয়, তা জানতে সারাদেশের নজর ছিল নন্দীগ্রামের দিকে।
প্রাথমিকভাবে সংবাদসংস্থা এএনআই জানায়, ১,২০০ ভোট জিতেছেন মমতা। কিন্তু পরে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, শুভেন্দু জিতেছেন। তা নিয়ে চূড়ান্ত ধোঁয়াশা তৈরি হয়। সেই মামলা এখন গিয়েছে বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে। যদিও এই মামলা ভিন রাজ্যে সরানোর জন্য শুভেন্দু মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। সেই ফয়সালা এখনও ঝুলে রয়েছে।