কলকাতা ব্যুরো: আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশ তালিবানদের দখলে চলে গেলো। কাবুল থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার দূরে গজনি প্রদেশই এখন তালিবানের শক্ত ঘাঁটি। এই নিয়ে মোট ১০ টি প্রদেশে চলে গেল তালিবানি দখলে। আর এরপরই আফগানিস্তান সরকারের তরফে তালিবানদের ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমেরিকার সামরিক কার্যালয় পেন্টাগনের তরফ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যেই কাবুল দখল করে ফেলবে তালিবান। বুধবার এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর বৃহস্পতিবার সেই আশঙ্কা কিছুটা সত্যি করে গজনি হাতছাড়া হল আফগানিস্তানের আসরাফ ঘানি সরকারের।

সূত্রের খবর আফগানিস্তান জুড়ে চলা তালিবানদের এমন অমানবিক অত্যাচারে ইতি টানার জন্যই তালিবানকে এমন প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। অন্যদিকে আফগানিস্তানের অন্যতম বড় শহর লস্কর গাহে আফগান সেনার সঙ্গে জোর লড়াই চলছে তালিবানি সন্ত্রাসবাদীদের। লস্কর গাহের পুলিশ হেডকোয়ার্টারে দখলদারি নিয়েছে তালিবান। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার সন্ত্রাসবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন, বাকিরা সরকারি অফিসের নিরাপদ ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এখনও পর্যন্ত একটানা লড়াইয়ের পর তালিবানেরা প্রায় ১০টি প্রদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে। এমনকি বৃহস্পতিবার তালিবানেরা কাবুল থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গজনী শহরও দখল করে নেয়। গজনীকে কাবুলের প্রবেশদ্বার হিসেবে ধরা হয়। এই শহর তালিবানের হাতে চলে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আফগানিস্তান। এরপরে এদিন তালিবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করার প্রস্তাব দেয় আফগান সরকারের মধ্যস্থতাকারীরা। ইতিমধ্যেই গজনির সমস্ত সরকারি দফতরের হেডকোয়ার্টারের দখল নিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। ওই শহরের সমস্ত সরকারি আধিকারিক এবং গজনির গভর্নরকে ও কাবুলের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন জারি হলে এক টাকাও আর্থিক সাহায্য করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে জার্মানি। জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাস জানিয়েছেন, যদি আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবান ও সেখানে শরিয়া আইন বলবৎ হয় তাহলে এক পয়সাও দেবে না জার্মানি। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের আশঙ্কা, তালিবান যে ভাবে এগোচ্ছে তাতে তারা শক্তিশালী হয়ে উঠবে আর তিন মাসের মধ্যে কাবুল দখল করে ফেলবে।

এদিকে, আফগানিস্তান ও তালিবানিদের মধ্যে সংঘর্ষের মাঝেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, যতদিন আসরাফ ঘানি দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ততদিন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি আফগানিস্তান প্রশাসনের সঙ্গে কথাই বলবে না। ইমরান আরও বলেন, তিন-চার মাস আগে ওরা যখন এসেছিল, আমি তালিবানিদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। তারা জানিয়েছিল যতদিন আসরাফ ঘানি রয়েছেন, ততদিন ওরা কথা বলবে না।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version