কলকাতা ব্যুরো: আর কোনও শত্রুতা নেই, সকলকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন তালিবান নেতা খালিল উর রহমান হাক্কানি। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি, প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ ও প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামিদুল্লাহ মোহিব-কেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান হাক্কানি। ‘দিল দরিয়া’ তালিবানের তরফে তাদের কাবুলে ফিরে আসার আহ্বানও জানানো হল।
সম্প্রতিই একটি সাক্ষাৎকারে খালিল উর রহমান হাক্কানি বলেন, “আমরা সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আসরাফ ঘানি, আমরুল্লাহ সালেহ ও হামিদুল্লাহ মোহিবকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সঙ্গে ওনাদের আর কোনও শত্রুতা নেই। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে যারা আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাদের সকলকেই আমাদের তরফ থেকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।”
তালিবান শাসনের ভয়ে যারা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়ে হাক্কানি বলেন, আপনাদের ভয় পেয়ে পালানোর কোনও কারণ নেই। শত্রুরাই ভুল খবর প্রচার করছে যে আমরা প্রতিশোধ নেব আপনাদের উপর। তাজিক, বালোচিস, হাজারা ও পাস্তুন, সকলেই আমাদের ভাই।
হাক্কানি আরও জানান, তালিবানরা কখনওই আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। মার্কিন বাহিনীই তাদের ঘরে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল প্রথমে, তাদের ধর্ম, সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল। সেই কারণেই তারা অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। সাড়ে তিন লাখ আফগান সেনা, যাদের ক্রমাগত মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী সমর্থন জানিয়েছিল, তাদের পরাজিত করা তালিবানের কাছে বড় সাফল্য বলেই দাবি করেন তালিবান নেতা খালিল উর রহমান হাক্কানি।
তবে শুধু আফগানিস্তান দখলই নয়, তালিবানের লক্ষ্য সমস্ত মুসলিম শাসিত দেশগুলিকে সংযুক্ত করা, এমনটাই জানান হাক্কানি। শীঘ্রই নতুন আফগানিস্তান সরকার গঠন করা হবে এবং সরকারি পদগুলিতে দক্ষ ও শিক্ষিত ব্য়ক্তিরাই জায়গা পাবেন বলে জানান হাক্কানি। যারা মানুষকে একজোট করতে পারে, তাদেরও নতুন সরকারে জায়গা দেওয়া হবে।
গত সপ্তাহের রবিবার তালিবানরা কাবুল দখল করার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ আশ্রয় নিয়েছেন পঞ্জশীরে, এমনটাই সূত্রের দাবি। সেখান থেকেই তিনি তালিবান বিরোধী নর্দান অ্যালায়েন্সের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। হাক্কানি পঞ্জশীরে তালিবান বিরোধী আন্দোলন নিয়ে মুখ না খুললেও ঘানি ও আমিরুল্লাহ সালেহ ফের কাবুলে ফেরত চলে আসতে পারেন বলেই জানান তিনি।