এক নজরে

#Mithun Chakraborty : বঙ্গ বিজেপিকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্রের ‘তুরুপের তাস’ মিঠুন

By admin

July 04, 2022

কলকাতা ব্যুরো: বঙ্গ বিজেপিকে অক্সিজেন দিতে শাহ-নাড্ডার নির্দেশে দলের রাজ্য দপ্তরে মিঠুন চক্রবর্তী। একুশের নির্বাচনের আগে প্রচারে ৫৫দিন সময় দিয়েছিলেন। সোমবার বিজেপির রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে মিঠুন জানালেন, এবার আরও বেশি সময় দেবেন তিনি। দিল্লি যেভাবে তাঁকে কাজে লাগাবে তিনি কাজ করবেন।

সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে দলের যা টালমাটাল অবস্থা তাতে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের উপর চরম বিরক্ত দিল্লি। রাজ্য নেতাদের চূড়ান্ত অনাস্থা কেন্দ্রীয় নেতাদের। তাই মিঠুন চক্রবর্তীকে বাংলায় পাঠিয়ে দলকে ফের চাঙ্গা করতে চাইছেন মোদি-শাহরা। পঞ্চায়েত ভোটেও মিঠুনকে কাজে লাগাতে চায় দল। যদিও গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই প্রশ্ন, একুশের ভোটের আগেও প্রচারে নেমেছিলেন মিঠুন। কিন্তু ‘মহাগুরু’কে হাতিয়ার করেও ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। বাংলায় বিজেপির স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পর অবশ্য মিঠুন আর রাজ্যে বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে আসেননি। যোগাযোগও রাখেননি দলের সঙ্গে।

হঠাৎ করে আবার রাজ্য বিজেপি দপ্তরে মিঠুনের আসা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের বক্তব্য, মিঠুনের কোনও প্রভাব নেই। মিঠুন কোনও জায়গায় দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারে না। বলিউডে প্রভাব হারিয়ে উটিতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। হোটেল খুলেছিল। ওর সেসবই করা ভাল। সেই মিঠুন আর নেই। একবছর আগে পাঠিয়ে কোনও লাভ হয়নি। একবছর পরে যারা পাঠিয়েছে তারা বুঝবে। কিছু নেওয়ার জন্য যারা দল পরিবর্তন করে তারা রাজ্যের কী পরিবর্তন করবে। বাংলার মানুষ এসব পছন্দ করে না।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, মিঠুন চক্রবর্তী নেতা হিসাবে বড়, কিন্তু নেতা হিসাবে তিনি ফ্লপ, অকৃতজ্ঞ, বেইমান। এক বছর আগেও তিনি ঘুরে ঘুরে অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু হারের পর তিনি আর মুখ দেখাতে পারেন নি। এরপরই কুনালের প্রশ্ন এক বছর তাঁকে বাংলায় আসতে কে বারন করেছিল? পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনপ্রিয় অভিনেতাকে সাংসদ করার পর তিনি যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর পিঠে ছুড়ি মেরে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন তার তীব্র নিন্দা করেন কুনাল।

তবে ইতিমধ্যেই মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে প্রবল গুঞ্জন বিজেপির অন্দরে। রাজ্যসভায় মিঠুন চক্রবর্তীকে সাংসদ করে বাংলায় বিজেপির সংগঠনকে সক্রিয় করার পরিকল্পনা বিজেপির? রাজ্যসভায় রুপা গঙ্গোপাধ্যায়ের জায়গায় মিঠুন? এমনই জল্পনা চলছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। সম্প্রতি, রুপা গঙ্গোপাধ্যায় ও স্বপন দাশগুপ্তের রাজ্যসভা পদের মেয়াদ শেষ হয়েছে।সামনেই উপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেই ভোটে রাজ্যসভার সাংসদরা ভোট দেবেন।

কেন্দ্র চায় উপ রাষ্টপতি নির্বাচনের আগেই রাজ্যসভায় বিজেপির শূন্যপদ পূরণ করতে। উপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির কাছে ২ টি ভোট যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সূত্রের খবর, বাংলা থেকে খালি হওয়া এই দুটি আসনে প্রার্থী বাংলারই হবে। রাজ্য নেতৃত্বকে এমনই আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। এরপরেই, দিল্লির নির্দেশে কলকাতায় আসেন মিঠুন চক্রবর্তী

সোমবার রাজ্য বিজেপি দপ্তরে প্রায় দেড় ঘণ্টা সুকান্ত মজুমদার, রাহুল সিনহাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মিঠুন চক্রবর্তী। ছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ, কল্যান চৌবে প্রমুখ। রাজ্য দপ্তরে দলের নেতা-কর্মীরা অভ্যর্থনা জানান মহাগুরুকে। দলীয় বৈঠকে মিঠুন রাজ্য নেতাদের বলেছেন, তিনি আগামী দিনে বিজেপির সঙ্গেই থাকবেন।

এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিনেতা। একুশের ভোটে বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করলেও মিঠুনের বক্তব্য, ৩ থেকে আসন বেড়ে ৭৭ হয়েছে। ভোট বেড়েছে। তিনি খুশি। একেবারেই বাজিমাত হয়ে যায় না।
একবছর পর তিনি এলেন কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মিঠুন বলেন, কিডনিতে পাথর হয়েছিল। অসুস্থ ছিলেন। তাঁর দাবি, আমি রাজনীতি করি না। মানুষ নীতি করি। মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষের জন্য কিছু করতে গেলে ক্ষমতার দরকার হয়। বিজেপির ক্যাডারদের উৎসাহ কম রয়েছে বলে স্বীকার করে তাঁর দাবি, এই উৎসাহ উত্তরোত্তর বাড়বে।