কলকাতা ব্যুরো: কোভিড আবহে আগামী ২২ তারিখ রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোট পিছিয়ে গিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি চার পুরনিগমের নির্বাচন। ১৪ ফেব্রুয়ারি গণনার সম্ভাব্য দিন। এই পরিস্থিতিতে বামফ্রন্টের তরফে নতুন প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠানো হলো নির্বাচন কমিশনে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর আবেদন, শুধু চার পুরনিগমের নয়, রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার নির্বাচনের পর একসঙ্গে সমস্ত ফল প্রকাশ করা হোক।
শনিবারই কলকাতা হাইকোর্টের পরামর্শকে মান্যতা দিয়ে ২২ তারিখের ভোট পিছিয়ে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিশন জানিয়েছে, আসানসোল, শিলিগুড়ি, বিধাননগর ও চন্দননগর – ৪ পুরনিগমের ভোট হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। আপাতত করোনাবিধি মেনে প্রচারের কাজ হতে পারে। তবে ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে প্রচার বন্ধ করতে হবে। এরপরই বিকেলে বামফ্রন্টের তরফে আবেদন, ১২ এবং ২৭ তারিখ দু’দফায় রাজ্যের সমস্ত পুরসভার ভোট হওয়ার পর একইদিনে যেন ফল ঘোষণা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে, রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে ভোটের সম্ভাব্য দিনক্ষণ হিসেবে আদালতে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত দিন – ২৭ ফেব্রুয়ারির কথা উল্লেখ করা হয় বামেদের চিঠিতে।
করোনা পরিস্থিতিতে ভোট পিছনোর দাবিতে আগেই সরব ছিল বামফ্রন্ট। আদালতের হস্তক্ষেপে চার নির্বাচন কমিশন চার পুরনিগমের ভোট পিছনোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছে বামফ্রন্ট। শনিবার বিমান বসু চিঠি মারফত কমিশনের কাছে দাবি করেন, চার পুরনিগম ও অন্যান্য পুরসভার ভোট গণনা একইদিনে না হলে ভোটাররা প্রভাবিত হবেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি ২০১৫ সালের পুরভোটে ভোট গণনার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তাঁর দাবি, সেইবার ১৮ এপ্রিল ও ২৫ এপ্রিল ভোট হলেও গণনা হয় ২৮ এপ্রিল।
অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টের পরামর্শ মেনে তিন সপ্তাহ পুরভোট পিছিয়ে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আর এই সিদ্ধান্তের জন্য আদালত এবং কমিশনকে ধন্যবাদ জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সন্ধেয় টুইট করে ধন্যবাদ জানান তিনি। সেইসঙ্গে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলার পজিটিভিটি রেট ৩ শতাংশের নিচে আনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন সাংসদ।
২২ জানুয়ারির বদলে রাজ্যে চার পুরনিগমে ভোট হবে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি। রাজ্যে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কমিশন। সেই সিদ্ধান্তকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইটারে অভিষেক লেখেন, ভোট তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে অনেক ধন্যবাদ। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের পজিটিভিটি রেট ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এই লক্ষ্যপূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
একইসঙ্গে তাঁর বার্তা, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে শক্তিশালী করে তোলাই এই মূহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর এহেন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারের সংক্রমণকে বাগে আনতে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক সেরে বেরিয়ে তাঁর বার্তা ছিল, দু’মাসের জন্য ভোট-মেলা-খেলা সব বন্ধ রাখা দরকার। মানুষ বাঁচলে, আমরা বাঁচব। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত মত।