কলকাতা ব্যুরো: বুধবার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ১২১ তম জন্মদিবস। আর এই দিনই ভবানীপুরে তাঁর বাসভবনে অনুষ্ঠান ঘিরে অশান্ত পরিবেশের সাক্ষী রইলেন অনুগামীরা। একপক্ষের স্লোগান, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে রাজনীতি চলবে না। যে বা যারা সেটা করছে, তারা ‘গদ্দার’। আরেকপক্ষের স্পষ্ট দাবি, তৃণমূলই এমন পবিত্র দিনে বিজেপির কর্মসূচিতে বাধা দিতে এ ধরনের কুৎসা করছে। ভবানীপুরের এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মূলত তাঁর বিরুদ্ধেই স্লোগান তুলছিলেন হিন্দু মহাসভার সদস্যরা।
যদিও শুভেন্দু সেখানে পৌঁছনোর আগেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয়। কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন ঘিরে এ ধরনের রাজনীতির রং লাগল, তা মোটেই কাম্য নয় বলে মনে করছেন অনুগামীরা। বুধবার ভবানীপুরে ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ১২১ তম জন্মদিবস ঘিরে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তাঁর বাসভবনে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন হিন্দু মহাসভার সদস্যরা। ১১ টার পর তাঁদের অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রথমে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে মাল্যদান করেন তাঁরা। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু তারপরই যেন তাল কাটল। বাসভবনের বাইরে একাধিক পোস্টার। যাতে শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে রাজনীতি না করার বার্তা তো রয়েইছে, নাম না করে যাঁকে নিশানা করা হয়েছে, তিনি শুভেন্দু অধিকারী। এসব পোস্টার দেখিয়ে হিন্দু মহাসভার তরফে বক্তব্য পেশ করতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপির একদল সমর্থক হইহই করে কার্যত তেড়ে আসেন। পালটা হুঁশিয়ারিতে তপ্ত পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে আসরে নামতে হয়।
আর এদিন এমন বিক্ষোভের মুখে পড়ে হিন্দু মহাসভার দাবি, এটাই বিজেপির কালচার। উলটোদিকে বিজেপি কর্মী, সদস্যদের বক্তব্য, হিন্দু মহাসভা বলে আর কিছু নেই। ওরা তৃণমূলের লোক। ইচ্ছে করে আমাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এসব করছে। এখানে বিজেপিকে কখনওই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে দেয় না। আজও সেটাই করতে চাইছে। আমরা এসব বরদাস্ত করব না। যতবার ওরা এমন করবে, ততবারই ওদের তাড়িয়ে দেব।

যদিও শুভেন্দু অধিকারীর পথ আটকানোর যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তাতে সফল হননি হিন্দু মহাসভার সদস্যরা। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ পুলিশ হঠিয়ে দেওয়ার পর তিনি সেখানে পৌঁছে যান। বিনা বাধায় মূর্তিতে মাল্যদান করেন। তুলে ধরেন শ্যামাপ্রসাদের অবদানের কথা। বিক্ষোভ নিয়ে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, আমাদের মহিলা মোর্চা সদস্যদের দাপটেই তাঁরা সরে গিয়েছেন।
কিন্তু ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বের জন্মদিনে তাঁর প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ হিন্দু মহাসভার অস্তিত্বই যেভাবে প্রশ্নের মুখে পড়ল, তা সম্প্রতি দেখা যায়নি।