কলকাতা ব্যুরো: রাগ হয়েছে মায়াবতীর। বিজেপি বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও নাকি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই করার সময় তাঁর মতামত নেয়নি বিরোধী শিবির। তাই রেগেমেগে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করবেন। তাছাড়া দ্রৌপদী আদিবাসী। বহুজন সমাজ পার্টিও তো পিছিয়ে পড়াদের জন্যই লড়াই করে।
যদিও বিজেপি বিরোধিতায় মায়াবতী কতটা আন্তরিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বহু আগেই। বস্তুত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই ধীরে ধীরে বিরোধী পরিসর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন বেহেনজি। তাঁর পরিবারের সদস্য এবং দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি তদন্ত শুরু করার পর থেকেই প্রকাশ্যে বিজেপির বিরোধিতা করতে দেখা যায় না বিএসপি সুপ্রিমোকে।
এমনকী সদ্যসমাপ্ত উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সেভাবে লড়াইয়ের ময়দানেই নামেননি মায়াবতী। তাঁর দলের যে মূল ভিত্তি সেই দলিত ভোটব্যাংকের একটা বড় অংশও গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। উত্তরপ্রদেশের বাইরেও একাধিক রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলার অভিযোগ রয়েছে বেহেনজির বিরুদ্ধে। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীদের বৈঠকগুলিতে তেমন গুরুত্ব পাননি মায়াবতী। তাই গোঁসা করে বিজেপির প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
মায়াবতীর বক্তব্য, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেছে বেছে কয়েকটি দলকে বৈঠকে ডেকেছিলেন। শরদ পওয়ারও আমাদের আলোচনার জন্য ডাকেননি। আসলে বিরোধীরা শুধু সহমতের ভিত্তিতে প্রার্থী দেওয়ার নাটক করেছে।
তাছাড়া দ্রৌপদী মুর্মুকে আদিবাসী হওয়ায় বিএসপির পক্ষে তাঁকে সমর্থন করাই স্বাভাবিক। এমনটাই মনে করছেন মায়াবতী। তিনি বলছেন, বিএসপিই একমাত্র জাতীয় দল যার নেতৃত্বে রয়েছেন দলিতরা। আমরা অবদমিতদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিই। আর আদিবাসীরাও আমাদের আন্দোলনের অংশ।
বস্তুত মায়াবতীর দল বিএসপি জাতীয় স্তরে এখন প্রান্তিক শক্তি। গোটা দেশে তাঁর দলের বিধায়ক সংখ্যা দুই অঙ্ক পেরোয়নি। সাংসদ সংখ্যা লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে মোটে ১১ জন। শক্তি সামান্য হলেও মায়াবতীর সমর্থন বিজেপি প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিল।