কলকাতা ব্যুরো: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সম্পত্তির হিসেব চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, ৫ জুলাইয়ের মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে তাঁর নিজের সম্পত্তি ছাড়াও, স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ের বিয়ের আগের সম্পত্তির হিসেব হলফনামার মাধ্যমে জমা দিতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ জুলাই।
মঙ্গলবার বিচারপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছে জানতে চান, কতদিনের মধ্যে তিনি সম্পত্তির হিসেব জমা দিতে পারবেন? এর উত্তরে মানিকবাবু বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনে সম্পত্তির হিসেব জমা করেছি। সেখানকার থেকে কপি নিয়ে আমি তাড়াতাড়ি জমা করতে পারব।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মানিকবাবু জানান, নদিয়ায় তাঁর পৈতৃক ভিটে রয়েছে। যাদবপুরে রয়েছে তাঁর দু’টি ফ্ল্যাট। পাশাপাশি নয়াবাদে জমিও রয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের নামে। তবে পরিবারের নামে কত সোনা রয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি প্রাথমিক পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি।
এদিন পর্ষদের সদ্য প্রাক্তন সভাপতির সম্পত্তিরও মৌখিক হিসেব নেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত জানিয়ে দেয়, মঙ্গলবার বেলা ২টোয় মানিকবাবুকে আদালতে হাজির হয়ে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এদিন নির্ধারিত সময়েই আদালতে হাজিরা দেন তিনি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বিচারপতি শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, বাড়ি-ঘর, সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান। তবে এদিন দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মানিকবাবু বলেন, শিক্ষার অধিকার আইনে নিয়োগের দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করা হয়।
সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নিয়োগ সংক্রান্ত যে সমস্ত নথি জমা দিতে বলেছিল আদালত, তার অনেক কিছুই পেশ করতে পারেনি পর্ষদ। তাতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলা হয়েছিল, ২০১৭ সালে পর্ষদ যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল, সেই কমিটির সদস্যদের নাম দিতে হবে। কিন্তু পর্ষদ নাম দিয়েছে সিলেবাস কমিটির সদস্যদের। বিচারপতির মন্তব্য, পর্ষদ ওই সদস্যদের তালিকা অনুমোদন কমিটির সদস্য বলে আদালতে দেখিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভাঁওতা।
২০১৭ সালের ২০ নভেম্বরের বৈঠকের যে নথি পর্ষদের তরফে আদালতে পেশ করা হয়, তাতে বিন্দুমাত্র ময়লা না থাকায় আশ্চর্য হয়ে যান বিচারপতি। তিনি বলেন, এতেই মনে হচ্ছে এই নথি সম্প্রতি তৈরি করা। সমস্ত নথি এবং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হবে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে গঠিত কমিটির যে সব সদস্য বৈঠকের সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেননি, তাঁদের হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে স্বাক্ষর না করার কারণ।