কলকাতা ব্যুরো: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সরকার পক্ষ নিজেদের মতো করে প্রার্থী নিয়ে আলোচনাও শুরু করে দিয়েছে। অথচ বিরোধী শিবির কার্যত ছন্নছাড়া। আসলে বিরোধী শিবিরের বৃহত্তম দল কংগ্রেস এতদিন একপ্রকার শীতঘুমে ছিল। অবশেষে তাঁরা গাঁ-ছাড়া দিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিল। অনেকটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে হেঁটেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করল সোনিয়ার দল।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় আনার দায়িত্ব মল্লিকার্জুন খাড়গেকে দিয়ছে কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার রাতে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেও যোগাযোগ করবেন খাড়গে। ডিএমকে, শিব সেনার মতো দলের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই বিরোধীদের বৈঠকের একটি দিন ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা।
খাড়গে জানিয়েছেন, সোনিয়া গান্ধীই তাঁকে সব সমমনোভাবাপন্ন দলকে একত্রিত করে একজন প্রার্থীর নাম ঠিক করার দায়িত্ব দিয়েছেন। সোনিয়ার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন শরদ পওয়ারও। ঘটনা হচ্ছে, বিরোধীরা একত্রিত হলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি যে বেগ পেতে পারে, সেকথা অনেক আগেই বলেছেন মমতা। সেসময় সব বিরোধীকে একজোট করার প্রস্তাবে আমল দেয়নি কংগ্রেস। অবশেষে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর টনক নড়ল হাত শিবিরের।
বস্তুত, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক হিসেবনিকেশ। বেশ কয়েকটি রাজ্য-সহ কেন্দ্রে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও তাদের বেগ দেওয়ার মতো জায়গায় রয়েছে বিরোধীরা। পরিসংখ্যান বলছে, বিজেপি বিরোধী দলগুলি জোট বেঁধে হারাতে পারে গেরুয়া প্রার্থীকে। তবে বিরোধীদের একজোট হওয়াটাই এখনও প্রশ্নের মুখে।
এক্ষেত্রে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ইতিমধ্যেই তিনি দিল্লিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সলতে পাকিয়ে এসেছেন। কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও।
এছাড়াও, মুলায়মপুত্র অখিলেশ ও লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের সঙ্গে মমতার সম্পর্ক সুমধুর। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বিজেপি বিরোধী ভোট একত্রিত করার ক্ষেত্রে মমতাই বিরোধীদের সেরা বাজি হতে পারেন। কংগ্রেসও কার্যত মমতার দেখানো পথেই হাঁটছেন।