কলকাতা ব্যুরো: এবার আর রেড লাইট ভেঙে চম্পট দেওয়া কিংবা পকেটে লাইসেন্স না নিয়েও কলার তুলে চলে যাওয়ার সাহস দেখাতে গিয়ে দুবার ভাবতে হবে গাড়ি চালকদের। অনেক ক্ষেত্রে জরিমানার অঙ্ক কম হওয়ায় অনেকেই আইনের তোয়াক্কা না করেই বেরিয়ে যেতেন। এবার আর তা হচ্ছে না কারণ জরিমানার অঙ্ক একলাফে অনেকটাই বাড়লো। এক ধাক্কায় ট্র্যাফিক জরিমানার অঙ্ক অনেকটাই বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার।

কোন ক্ষেত্রে জরিমানার অঙ্ক কত? জানুন!
ড্রাইভিং লাইসেন্স বা সিএফ না থাকলে প্রথম বার ৫০০ টাকা। দ্বিতীয়বার ১৫০০ টাকা।
কন্ট্রাক্ট ক্যারেজের পারমিট থাকার পরও যেতে না চাইলে ৫০০ টাকা।
ট্রাফিক পুলিসকে ভুল তথ্য দিলে ২০০০ টাকা।
ট্রাফিক নির্দেশ না মানলে ২০০০ টাকা।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ৫০০০ টাকা।
ড্রাইভিং লাইসেন্স রাখার অনুমতি নেই অথচ গাড়ি চালাচ্ছেন এমন ক্ষেত্রে ১০,০০০ টাকা।
নির্দিষ্ট গতির বেশি গতিতে গাড়ি চালালে হালকা যানের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা। মাঝারি যানের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা। ভারী যানের ক্ষেত্রে ৪০০০ টাকা।
বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালনার জন্য ৫০০০ টাকা। একই অপরাধ তিন বছরের মধ্যে করলে ১০,০০০ টাকা।
মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালালে ১০০০ টাকা।
রোড সেফটি, বায়ু দূষণ ও শব্দদূষণ আইন ভাঙলে ১০,০০০। চালকের লাইসেন্স ৩ মাস বাতিল।
আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি চালালে ৫,০০০ টাকা।
উপযুক্ত ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া গাড়ি চালালে ১০,০০০ টাকা।
উপযুক্ত পারমিট ছাড়া গাড়ি চালালে ১০,০০০ টাকা।
সেফটি বেল্ট না বাঁধলে ১০০০ টাকা।
হেলমেট না পরলে ১০০০ টাকা।
সাইলেন্স জোনে হর্ন বাজালে ১০০০ টাকা।

রাজ্য সরকারের বক্তব্য, পথ দুর্ঘটনা কমাতেই এই সিদ্ধান্ত। পুলিশ চাইছে, চালক আরও সচেতন হোক। অন্তত এবার জরিমানা বাড়ার পর থেকে। যদিও গত কয়েক বছরে কলকাতা-সহ শহরতলিতে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫৪৫ ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গের কেস নথিভুক্ত হয়েছে গত বছর। যেখানে ২০১৯ সালে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ ছিল। ৫০ লক্ষ ১৩ হাজার ৩৮৬ এবং ২০১৮ সালে এটা ছিল ৫৫ লক্ষ ৬৭ হাজার ২০০।

জানা গিয়েছে, ডিজিটাল প্রমাণ যেমন সিসিটিভি ফুটেজ, স্পিড ক্যামেরা, রেড লাইট ভায়োলেশন ডিটেক্টটর দিয়ে চিহ্নিত করা হবে অভিযুক্তদের। ট্রাফিক পুলিশ অভিযুক্তের গাড়ি এবং কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করবেন। নো পার্কিং জোনে গাড়ি রাখা দেখলে তাতে স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হবে। এসএমএস-এর মাধ্যমে নিয়ম ভঙ্গকারীদের সূচনা দেওয়া হবে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে। এছাড়াও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের ওয়েবসাইটে নিয়ম ভঙ্গের যাবতীয় তথ্য মিলবে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিরাট জরিমানা থেকে রাজ্যের ভালোই আয় হবে। সেই টাকা বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে ব্যয় করতে পারবে সরকার।