কলকাতা ব্যুরো: ফের বাঘের হামলায় প্রাণ গেল এক মৎস্যজীবীর। নিখিল মণ্ডল নামে বছর পঞ্চাশের ওই মৎস্যজীবী গোসাবা ব্লকের লাহিড়ীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরি এলাকার বাসিন্দা। ওই মৎস্যজীবীর কাছে কোনও বৈধ অনুমতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।
নিখিল মণ্ডল দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে ডিঙি নৌকা করে সুন্দরবনের ঝিলা ৪ নম্বর জঙ্গলের কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। নদীর খাড়িতে নেমে কাঁকড়া ধরার সময় সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে আসে। সুযোগ বুঝে আচমকা নিখিলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাকে টানতে টানতে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেই মুহূর্তে অপর দুই সঙ্গী কাঁকড়া ধরার শিক আর নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
বেশ কিছুক্ষণ বাঘে মানুষে লড়াই চলে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে রণে ভঙ্গ দেন দুই সঙ্গী। বাঘ তার শিকার নিয়ে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। দুই সঙ্গীসাথী নৌকার বৈঠা বেয়ে দ্রুত গ্রামের ঘাটে ফিরে আসে। তাঁরা ওই মৎস্যজীবীর পরিবারের লোকজনকে দুর্ঘটনার কথা জানায়। শোকে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই মৎস্যজীবীর পরিবার পরিজন।
অন্যদিকে, বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী পরে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের দুর্ঘটনাস্থলে যান। বাঘের কবল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসা হয় দেহটি। ওই মৎস্যজীবীদের কাছে কোনও বৈধ অনুমতিপত্র ছিল কিনা তা বনদপ্তর খতিয়ে দেখছে।
এর আগে গত শুক্রবার মৎস্যজীবীদের একটি দল সুন্দরবনের আজমলমারির জঙ্গলে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে যায়। শনিবার তাঁরা নদীর চরে নেমে কাঁকড়া সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করে। সেই সময় বাঘটি ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই দলের উপরে। পুঞ্চু মুণ্ডা নামে এক মৎস্যজীবীকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জঙ্গলের ভিতরে কিছুটা চলেও যায়। বাকি মৎস্যজীবীরা কোনওমতে প্রৌঢ় মৎস্যজীবীকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে পুঞ্চু মুন্ডার দেহ। তার জেরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ৫৭ বছরের মৎস্যজীবী।