কলকাতা ব্যুরো: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত অব্যাহত। ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টুইটে আক্রমণ শানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটে তিনি লিখেছেন পুলিশের শিরদাঁড়ায় আঘাত হানছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ সুপারদের রাজ্যপাল প্রতিদিন ফোন করেন কিনা এটা নিয়ে বিশেষ আলোকপাতের প্রয়োজন রয়েছে বলে টুইটে লিখেছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গতকাল প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যেই জানতে চেয়েছিলেন তাঁকে রাজ্যপাল ফোন করে চাপ তৈরি করেন কিনা।
মুখ্যমন্ত্রী টুইটে রাজ্যপালকে ব্লক করে দিলে কী হবে রাজ্যপাল কিন্তু আক্রমণ থামাচ্ছেন না। গতকালের পর আজ ফের টুইটে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটে তিনি লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের শিরদাঁড়ায় আঘাত করছেন। রাজ্যপাল টুইটে লিখেছেন কখন তিনি ফোন করেন পুলিশ সুপারদের সেটা নিয়ে আলোকপাত করা প্রয়োজন রয়েছে। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করেছেন নতুন টুইটে।
বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্বমেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে প্রকাশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেছিলেন রাজ্যপাল কি তাঁকে ফোন করে ভয় দেখান অর্থাৎ তিনি জানতে চেয়েছিলেন তাঁর উপর চাপ তৈরি করছেন কিনা রাজ্যপাল। তাঁর উপর কোনও রাজনৈতিক দলের চাপ রয়েছে কিনা। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছিলেন অনেকে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতারা ইন্ধন দিচ্ছে। কেউ বলে দেবে এটা করবে না ওটাকরবে না সেটা করবে না। যেটা নিজের দায়িত্ব সেটাই পালন করবে বলে সরাসরি পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
পাশাপাশি প্রশাসনিক বৈঠকে প্রকাশ্যে পুলিশ সুপারকে নির্ভয়ে কাজকরতে বলার ঘটনা নিয়ে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন তাই পুলিশ সুপারকে প্রকাশ্যে এই কথা বলেেছন। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে সেকারণেই এই সব কথা বলছেন তিনি। এই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে হেরেছেন বলেই এই ঘটনা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে রাজ্যপালকে কড়া জবাব অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ওঁর কথার উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত বলে জানান তিনি। তারপরই রাজভবনের উদ্দেশ্যে তোপ দেগে জানান, কোনও ফাইল বকেয়া নেই বলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় যে দাবি করছেন তা ঠিক নয় কারণ বিধানসভা থেকে কোন ফাইল রাজভবনে গেলে তা ফের বিধানসভায় ফিরে আসে। কিন্তু বেশ কয়েকটি ফাইল বিধানসভায় ফেরত আসেনি বলে অভিযোগ তাঁর।
এই বিষয়টি নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন থাকলে আরটিআই করা যেতে পারে। তা করলেই বিধানসভার তরফে জবাব দেওয়া হবে বলে জানান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাজেট কবে হবে তা স্পষ্ট করতে পারেননি তিনি। জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। রাজ্য বাজেট কবে হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি যথা সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ।
সোমবার থেকে বিধানসভায় ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করা হবে। এদিনই এই সিদ্ধান্ত হয়। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই বিধানসভার স্ট্যান্ডিং ও হাউস কমিটির বৈঠক শুরু হবে বলে বিধানসভা সূত্রের খবর।
যদিও রাজভবন ও বিধানসভার সংঘাতকে কটাক্ষ করেছে বামেরা। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন, বিধানসভা ও রাজ্যপালের ঝগড়া কলতলায় নেমে এসেছে। আর অধ্যক্ষ আরটিআই করার কথা বলছেন তা করে কোন লাভ হয় না। কারণ কোনও প্রশ্নেরই জবাব বিধানসভা অথবা সরকার দেয় না।