কলকাতা ব্যুরো: স্কুল সার্ভিস কমিশনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বেলা ২টোর মধ্যে প্রয়োজনীয় নিয়োগের কাগজপত্র না দেখাতে পারলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। যদিও এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে নথি পেশের জন্য আরও সময় চাওয়া হয়েছিল কিন্তু, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সাফ জানিয়ে দেন, তিনি কমিশনকে এ নিয়ে আর সময় দেবেন না।
এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আজ বেলা ২টোর মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত নথি আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন কিন্তু, কমিশনের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত নথি জমা দিতে সময় চান কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল তা স্কুল সার্ভিস কমিশনের রেকর্ডে নেই ৷ কমিশনের এই যুক্তি শুনে রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে যান বিচারপতি।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারির সুরে বিচারপতি বলেন, কমিশনের অফিসের সব কর্মচারীকে বের করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে সিআইএসএফ দিয়ে অফিসের দখল নেবে আদালত। সিবিআই-কে দিয়ে তদন্ত করানো হবে। নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে কমিশনের ভূমিকায় রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে যান বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালে প্রায় ১৬ হাজার পদে নিয়োগ হয় কিন্তু, বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী আদালতের মামলা করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন ভুয়ো নথি পেশ করে ২৫ জনকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
সেই মামলাতেই বিচারপতি কমিশনের কাছে ওই ২৫ জনের নিয়োগপত্র সংক্রান্ত সমস্ত নথি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে বুধবার আদালতে কমিশনের সচিবকে তলবও করেন বিচারপতি ৷ তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে জানান, সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের রেকর্ডেও ওই ২৫ জনের কোনও নিয়োগ সংক্রান্ত নথি নেই ৷ কীভাবে ২৫ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে, তা কমিশন জানে না ৷ যা শুনে রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে যান বিচারপতি ৷ বেলা ২টোর মধ্যে ২৫ জনের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷
সেই সঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এও জানিয়েছেন, যদি কমিশনের কোনও আঞ্চলিক দফতর থেকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়ে থাকে তা খুঁজে বের করা হোক ৷ বেলা ৩টের সময় ফের এই মামলার শুনানি হবে ৷