কলকাতা ব্যুরো: অদ্ভুত সমাপতন বোধহয় একেই বলে! উৎসবই ছিল যাঁর প্রাণ, সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় ইহলোকের মায়া ত্যাগ করলেন উৎসবের রাতেই। বলা যেতে পারে শক্তির আরাধনার রাতেই চলে গেলেন বঙ্গ রাজনীতির এক মহিরূহ। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল, কখনও বিদ্রোহী হয়ে নির্দল হিসেবে ভোটে লড়াই। আবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারে কনিষ্ঠতম মন্ত্রী হিসেবে নিজের নাম লেখানো। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে বঙ্গ-রাজনীতির এক বর্ণময় অধ্যায় শেষ হল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২২ মিনিটে। ঘোষিতভাবে ভূতকে ভয় পাওয়া সুব্রত ভূত চতুর্দশীর পরই পরলোক গমন করলেন।

১৯৪৬ সালের ১৪ জুন জন্ম সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে অ্যানথ্রোপলজিতে অনার্স নিয়ে বিএসসি পাস করেন তিনি। তারপর আর্কিওলজিতে এমএসসি কলকাতা বিশ্ববিদ্য্যালয় থেকে। ওই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিউসেলজি থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেছেন তিনি। এছাড়া লন্ডনের এসওএএস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কালচারাল অ্যানথ্রোপলজি থেকে পিজিসার্ট ও পাস করেন তিনি।

বিংশ শতকের ছয়ের দশকে সালে কংগ্রেসী রাজনীতি দিয়ে তিনি কেরিয়ার শুরু করেন। ছাত্র রাজনীতি দিয়েই তাঁর শুরু। আর সেই সময় থেকেই প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অচিরেই তিনি স্নেহভাজন হয়ে ওঠেন ইন্দিরা গান্ধীরও। রাজনীতির মতো বালিগঞ্জের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক সেই ১৯৭১ সাল থেকে। ১৯৭১ ও ৭২ সালে তিনি বালিগঞ্জ থেকে বিধায়ক নির্বাচিতও হন। তাঁকে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সির্দ্ধার্থ শঙ্কর রায়। বঙ্গ-সরকারে তিনিই কনিষ্ঠতম মন্ত্রী। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৬ বছর। আর বৃহস্পতিবার রাজ্যবাসীকে ছেড়ে পরলোকে গমন করলেন সুব্রতবাবু।

জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার পিস হেভেনে রাখা হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রবীন্দ্র সদনে রাখা থাকবে তাঁর মরদেহ। সেখানেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারবেন অনুরাগীরা। দুপুর ২ টোর পর মন্ত্রীকে তাঁর নিজ বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে।