কলকাতা ব্যুরো: টানা ৪৮ ঘন্টার বৃষ্টিতে তছনছ গোটা পাহাড়। গত চব্বিশ ঘন্টায় দুই জেলা মিলিয়ে অন্তত ৪০টি জায়গায় নতুন করে ধসের ঘটনা ঘটেছে। ভুটান ও সিকিমে টানা বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে তিস্তা নদী। তিস্তায় জলস্ফীতির কারণে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে । এমনকি পাহাড়েও তিস্তা নদীতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়িতেও তিস্তা নদীর রূপ ভয়াবহ।

একদিকে ২৯ মাইলে ধস অন্যদিকে তিস্তার জল এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও তিস্তার জলে ডুবে গিয়েছে। যার ফলে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পংয়ের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। গোটা পাহাড়জুড়ে এখন আতঙ্কের পরিবেশ।

যদিও দুই জেলা প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা ও সাহায্যের জন্য মাইকিং শুরু করা হয়েছে। দুই জেলায় প্রায় পুজোর মরশুমে ঘুরতে যাওয়া প্রায় ৫০০ জন পর্যটক আটকে রয়েছে। একাধিক জায়গায় ধসের কারণে কালিম্পংয়ের লাভা-আলগাড়া রাস্তাতেই প্রায় ১০০ যানবাহন আটকে রয়েছে। টানা বৃষ্টির ফলে মঙ্গলবার মাঝরাতে কালিম্পংয়ের তিস্তায় আটকে পড়ে প্রায় ২০ জন বাইক আরোহী। তাদের জেলা প্রশাসনের তরফে তিস্তা কমিউনিটি হলে রাত্রীবাসের ব্যবস্থা করা হয়।

পাশাপাশি তিস্তার জলস্ফীতির কারণে ত্রিবেণী এবং পেশোকখোলাগামী মূল সড়কও জলে ডুবে গিয়েছে। আলগাড়া তিন মাইলের লাভা এলাকায় একটি গাছ চারচাকা গাড়ির উপর ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চালকের। গুরুতর জখম হয়েছে আরও দু’জন যাত্রী।
দার্জিলিংয়ের রিম্বিক, লোধামা, মানেভঞ্জন, টারখোলা, সুখিয়াপোখরি, কার্শিয়াং, তাকদাহ, তিনচুলে, রিশপ, রঙ্গলি- সহ একাধিক জায়গায় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ে টানা বৃষ্টির জেরে সমতলেও তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। শিলিগুড়ি পৌরনিগমের ৪,৫,৮ সহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় রাতেই শিলিগুড়ি পৌরনিগমের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

অন্যদিকে, সমস্ত কর্মীর ছুটি বাতিল করে বুধবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কন্ট্রোল রুম। মহানন্দা নদীতেও হলুদ সংকেত জারি করেছে সেচ দফতর। শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার বলেন, রাতেই কন্ট্রোল রুম খুলে দেওয়া হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয় থেকে খাবারের সমস্ত ব্যবস্থা পৌরনিগমের তরফে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও প্রচণ্ড বরফ পড়ার কারনে বুধবার বন্ধ উত্তর সিকিমের গুরুডংমার লেক।