কলকাতা ব্যুরো: চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল মঙ্গলবার শুনানিতে বলেন, চিটফান্ডের মামলাগুলির শুনানিতে সরকারি আইনজীবীর উপস্থিতি না থাকলে মামলা পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই শুনানিতে আইনজীবীরা যাতে আদালতে হাজির থাকেন সেই দিকে নজর দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এই বিষয়গুলিতে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল একটু নজর দিতে পরামর্শ আদালতের। প্রয়োজনে একজন নোডাল অফিসারকে নিযুক্ত করার কথা বলেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ৷ যিনি এই সংক্রান্ত বিষয়ের উপর নজরদারি চালাবেন ৷ মঙ্গলবার দু’টি বেআইনি চিটফান্ড সংস্থার মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ ৷
উল্লেখ্য, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় প্রতারিতদের টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সক্রিয় হয়েছেন ৷ আর তাই এই সংক্রান্ত মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি ৷ কয়েক মাস ধরেই প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এই ধরনের মামলা শুনছেন ৷ কিন্তু, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সমস্ত মামলায় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির আইনজীবীরা হাজির থাকছেন না ৷ তাই পুলিশকে দিয়ে ওই সব সংস্থার কর্তাদের এজলাসে হাজির করাচ্ছে হাইকোর্ট। লক্ষ্য, টাকা ফেরৎ দেওয়ার ব্যাপারে তাদের দিয়ে বলিয়ে নেওয়া।
প্রসঙ্গত, গত মাসে একের পর এক বেশ কিছু সংস্থার কর্তাদের আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এম পি এস সংস্থার মালিকদের জেল থেকে হাজির করা হয়েছে। যারা জেলে নেই এমন বেশ কিছু মালিককেও আদালতে আস্তে হয়েছে। যদিও গত শুনানিতে সরকারি তরফে আইনজীবী হাজির না থাকায় ক্ষুব্ধ হয় আদালত। তখনই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজ্য পুলিশের ডিজিকে মঙ্গলবার সশরীরে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ সেই নির্দেশ মতো আজ মামলার শুনানিতে রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি মনোজ মালব্য আদালতে হাজির হন ৷
রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি মনোজ মালব্যের তরফে আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে বলেন, এই সমস্ত মামলাগুলি ২০১৬ থেকে চলছে ৷ ফলে সমস্ত ফাইল এদিক-ওদিক হয়ে পড়ে আছে ৷ আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি আদালতকে সঠিক সময়ে সঠিক কাগজপত্র পাঠানোর ৷ যার পাল্টা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত মামলাগুলি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে ৷ পুলিশের সাহায্য নিয়েই মামলার নিষ্পত্তি করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনাদের একজন নোডাল অফিসার নিযুক্ত করা উচিত ৷
এর জবাবে ডিজির আইনজীবী অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছি ৷ এরপরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তাঁর নির্দেশে জানান, আগামী ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্য কি কি পদক্ষেপ নিল, সেই ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে হবে আদালতকে ৷ ২১ ডিসেম্বর চিটফান্ড মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত ৷