কলকাতা ব্যুরো: মঙ্গলবার সকাল থেকেই অতি গভীর নিম্নচাপে দিনভর বৃষ্টি চলছে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গজুড়ে। তবে এখনও সেই বৃষ্টি থেকে রেহাই মেলার কোনও সুখবর দিতে পারল না আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া ও দুই ২৪ পরগনায় জারি করা হয়েছে কমলা সর্তকতা। এ ছাড়াও হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় হলুদ সর্তকতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে যে, গভীর নিম্নচাপ অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ৷ যার ফলে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গজুড়ে প্রবল বর্ষণ চলছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই অতি গভীর নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। আর আগামী ৪৮ ঘণ্টায় শক্তিশালী নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হবে।

এই মুহূর্তে গভীর নিম্নচাপটি উত্তর ছত্তিশগড়ের উপর অবস্থান করছে এবং এটি ক্রমশ মধ্যপ্রদেশের দিকে অগ্রসর করছে। তবে নিম্নচাপটি আমাদের রাজ্য থেকে অনেক দূরে থাকলেও এই নিম্নচাপের প্রভাবে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প প্রবেশ করেছে বাংলায় ৷ যার ফলে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। সকাল থেকেই সূর্যের দেখা নেই। এরপর বেলা বাড়তেই দফায় দফায় শুরু হয় বৃষ্টি। কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনায় দফায় দফায় বৃষ্টি চলছে। কখনও ঝিরঝিরে আবার কখনও ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জনসমাগম ছিল কম। এদিন শহরের বেশ কয়েকটি অংশ থেকে জল জমার খবর এসেছে। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঠনঠনিয়া সংলগ্ন এলাকা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়। সকাল ৮টা থেকে ১২টা চার ঘণ্টায় কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৪৫ থেকে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। উল্টোডাঙ্গায় চার ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৫০ মিলিমিটার ৷ বেলগাছিয়ায় ৪৫ এবং মানিকতলায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ৷

এছাড়া ধাপা লকগেটে ৪৫ মিলিমিটার, পামার ব্রিজে ৪৫ মিলিমিটার, বালিগঞ্জে ২৯ মিলিমিটার, ঠনঠনিয়াতে ৩৫ মিলিমিটার ও যোধপুর পার্কে ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মোটের উপর কলকাতার সর্বত্রই কম বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। পাশাপাশি প্রকট হয়েছে শহরের চেনা জলছবির চেহারা।
পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড় এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডায় ১০০ মিলিমিটার এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা ও ঝাড়গ্রামে ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার বিকেলের পর থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে। নিম্নচাপ যত বাংলা থেকে দূরে সরে যাবে এবং নিম্নচাপের শক্তি দুর্বল হবে, ততই বৃষ্টির দাপট কমবে । আগামিকাল দুপুরের পর থেকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
তবে উত্তরবঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘের কারণে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এদিন বৃষ্টির কারণে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধি রোড-সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে ৷