কলকাতা ব্যুরো: জলপাইগুড়ি হয়ে চিনে পাচারের ছক। সুদৃশ্য ক্রিস্টালের তিন জার বন্দি কোবরা সাপের বিষ-সহ গ্রেপ্তার পাচারকারী। বাজেয়াপ্ত বিষের বাজার মূল্য আনুমানিক১৩ কোটি টাকা। ধৃত যুবকের নাম সেলিম আখতার মণ্ডল, বয়স ৩২ বছর। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকায়। বাংলাদেশ থেকে এই বিষ ভারতে ঢুকেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান বনদপ্তরের। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়িতে হাতবদলের সময় হাতেনাতে যুবককে গ্রেপ্তার করে গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের বনকর্মীরা। শনিবার ধৃত সেলিমকে জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হলে তাঁকে ৬ দিনের জন্য বন দফতরের হেফাজতে পাঠানো হয়।
এদিকে আজই তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন বনদপ্তরের আধিকারিকেরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে নানা বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে, ধৃত সেলিম আখতার মণ্ডলের সঙ্গে বাংলাদেশের পাচারকারীদের খুব ভালো যোগাযোগ রয়েছে। তবে শুধু এই তিনটি জারই নয়। আরও বেশ কিছু পরিমাণ এই ধরনের কোবরা বিষ হিলি সীমান্তে মজুত করা হয়েছে পাচারের জন্য। যার মূল্য আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে ১০০ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।
তবে এই বিপুল পরিমাণ কোবরা ভেনম কি শুধু মাত্র আর্থিক মুনাফার জন্য পাচার হচ্ছিল? এই লেনদেনের পিছনে বেআইনি অস্ত্র কারবারিদের হাত আছে কি না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়িতে ২০১৫ সাল থেকে একের পর এক অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে সাপের বিষ উদ্ধার করে বৈকন্ঠপুর বনবিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জ। পাচারের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক থেকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে বনদপ্তর। পরবর্তী কয়েক বছর বিষ পাচারের ঘটনা সামনে না এলেও পাচারকারীরা যে হাত গুটিয়ে বসে নেই শুক্রবারের গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের অভিযান সে কথাই প্রমাণ করে।
বনদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, এর আগে যে কয়েকটি সাপের বিষের জার উদ্ধার হয়েছে সবকটার গায়ে রেড ড্রাগন কোম্পানির লেবেল সাটা ছিল। পাচারকারীরা ফ্রান্স থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আনার পর ভুটান, নেপাল, চিনের মতো দেশে পাচারের জন্য জলপাইগুড়িকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে।