কলকাতা ব্যুরো: দীর্ঘ ৬ বছর পর তৃণমূল কংগ্রেসে ‘প্রত্যাবর্তন’ ঘটলো শিখা মিত্রের। যদিও প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রের স্ত্রী’র দাবি, কখনও তৃণমূল ছাড়েননি। স্রেফ সামান্য মতবিরোধ হওয়ার কারণে ঘাসফুল শিবির থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে আবারও তিনি ফিরে এসেছেন।
রবিবার দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায় এবং চৌরঙ্গীর তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন শিখা। তাঁকে বঙ্গজননীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দু’হাত খুলে স্বাগত জানাচ্ছি শিখা বৌদিকে। অনেকে যোগ দিচ্ছেন। পরে শিখা মিত্র বলেন, তৃণমূলে নতুন করে যোগ দেওয়ার কোনও বিষয় নেই। আমি তো তৃণমূল ছাড়িনি। মতের বিরোধের কারণে সরে গিয়েছিলাম। সেটা হতেই পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ফোন করে যেদিন সোমেন মিত্রের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছিলেন, সেদিন ভালো লেগেছিল। মমতা বলেছিলেন, শিখাদি তুমি এসো।
তাঁর যোগদানের পর তৃণমূল নেত্রী মালা রায় বলেন, শিখা ফেরায় দল আরও শক্তিশালী হল। শিখা মিত্র রাজি ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে কাজ করবেন। কারণ তিনি দলের বিধায়ক ছিলেন দীর্ঘদিন। অন্যদিকে শিখা পুত্র সম্পর্কে মালা রায় সাফ জানান রোহণ আসবে কিনা তা সে ঠিক করবে। তবে রোহণ ইতিমধ্যেই দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছে।
তবে শিখার তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, বলার তো কিছু নেই। কংগ্রেসে এসেছিলেন। নিজের স্বামীকে নিয়ে শাসক দলে গিয়েছিলেন। আবার বেরিয়ে এসেছেন। সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন, তিনি কোন দলে থাকবেন, সেটা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে তৃণমূলের টিকিটে ডায়মন্ড হারবার থেকে সাংসদ হয়েছিলেন সোমেন মিত্র। স্বামীর ছেড়ে যাওয়া কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শিখাকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ সালে অধুনা বিলুপ্ত শিয়ালদহ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন শিখা। ২০১১ সালে পরিবর্তনের সময় চৌরঙ্গী থেকে জিতেছিলেন। পরে তৃণমূল ছাড়লেও আবারও সেখানেই ফিরলেন শিখা।
সোমেন ও শিখা মিত্রের ছেলে রোহন মিত্র যদিও এখনও কংগ্রেসেই রয়েছেন ৷ তবে, তাঁরও তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা জোরাল হচ্ছে। যদিও সোমেন পত্নীর তৃণমূলে দ্বিতীয়বার আনুষ্ঠানিক যোগদানের আগেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রোহন মিত্র। প্রদেশ কংগ্রেসে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি একরাশ ক্ষোভ ঝরে পড়ে তাঁর কথায়। তাঁর নিশানায় ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নান।