কলকাতা ব্যুরো: করোনা টিকা পাওয়ার জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের বাধ্যবাধকতায় মোদির ডিজিটাল ইন্ডিয়া বার্তা বুমেরাং হতে শুরু করেছে। দেশের ১২৫ কোটি মানুষের কত জনের হাতে নেট যুক্ত মোবাইল রয়েছে, আর দেশের কত গ্রাম এখনো বিদ্যুৎহীন – এই দুইয়ের হিসেব কষলে অংকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ফলে সকলকে টিকা দানের ক্ষেত্রে যে লক্ষ্য তা এই মোবাইল রেজিস্ট্রেশন এর জটিল আবর্তেই ঘুরে মরবে কিনা, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, দেশের প্রান্তিক, মোবাইল বিহীন জীবনে এখনও বেচে থাকা মানুষের টিকার কি হবে সেই প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
হিসেব বলছে, বর্ত্তমান বছরে দেশে ৫০ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহারের আওতায় পৌঁছবেন। সে ক্ষেত্রে জনসংখ্যার অর্ধেকও যদি টিকা পেতে চান, তাহলে কত বছর লাগবে, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে।
করোনার এই মহামারী হাত থেকে বাঁচার একমাত্র অস্ত্র হলো ভ্যাকসিন। ভারতে ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারী থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। ভারতে আপাতত তিনটি ভ্যাকসিন অনুমোদিত হয়েছে: কোভাক্সিন, ভারত বায়োটেক দ্বারা তৈরী। কোভিশিল্ড, অক্সফোর্ড / অ্যাস্ট্রাজেনেকার।স্পুটনিক ভি, গামালিয়া গবেষণা ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি, রাশিয়ার।
কিন্তু এই ভ্যাকসিন নেওয়াটা যতটা সহজ মনে হয় ততটা না। কারণ এর জন্য আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। যার সম্পূর্ন প্রক্রিয়াটি হয় অনলাইনে। এ বছর ২৮ এপ্রিল থেকে রেজিস্ট্রেশন করার পক্রিয়া শুরু হয়, তবে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয় ১ এপ্রিল থেকে। এখনো পর্যন্ত ভারতে মোট ২৩.৭ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে, যাদের মধ্যে 199,222380 কোটি প্রথম ডোজ ও 4.56 কোটি মানুষের পুরোপুরি টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।
এই প্রক্রিয়াটি অনলাইন হওয়ার ফলে বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু অনলাইন হওয়ার ফলে অনেককে অসুবিধার মধ্যে পরতে হচ্ছে। গ্রামবাংলার অনেক মানুষ ভ্যাকসিন পাচ্ছে না কারণ স্লট বুকিং প্রক্রিয়ার জন্য। বর্তমানে এখনো অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষের কাছে স্মার্ট ফোন তো দূরের কথা ইলেকট্রিক পরিষেবাও ঠিক মতো নেই ফলে তাদের কাছে ভ্যাকসিন নেওয়াটা একটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাদেরকেও তো এই মারনমুখী করোনার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে, এছাড়াও অনেক রাজ্যের অনেক গ্রামবাসী আছে যাদের কাছে স্মার্ট ফোন থাকা সত্ত্বেও ঠিক করে স্লট বুকিং করতেপারছেন না এর কারণ স্বরূপ ঠিক থাক ইন্টারনেট পরিষেবা ও হতে পারে স্মার্ট ফোন ব্যাবহারে ওকিবহল নয় সেই কারণে তাদেরকেও বড়ো সমস্যার মুখে পরতে হচ্ছে।যেহেতু ভারত এখনও পুরোপুরি ডিজিটাল ইন্ডিয়া রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়নি তাই ভ্যাকসিন স্লট রেজিস্ট্রেশন করার পক্রিয়াটি অনলাইন এবং অফলাইনে চালু করলে শহরের মানুষের সাথে সাথে গ্রামবাংলার মানুষও উপকৃত হতো। এই মরণ মুখী কোভিড-19 ভাইরাসকে হারিয়ে জয়লাভ করতে সক্ষম হতো।