কলকাতা ব্যুরো: নারদ মামলায় রাজ্যের তিন হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রী সহ চারজনের গৃহবন্দির হাইকোর্টের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের দায়ের করা আবেদন গৃহীত হল। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিনীত সারণ ও বিচারপতি এস আর গভায়য়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করবে। এর ফলে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সারাদিন ধরে যে শুনানি করলো, তা মাঝপথে স্থগিত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চে দুই বিচারপতির জামিন নিয়ে মতান্তরে আপাতত ধৃতদের গৃহবন্দির নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে গোটা মামলা নতুন করে শুনানির জন্য পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তৈরি করে হাইকোর্ট। সোমবার সেই বেঞ্চের মামলা শুনানির বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করে জানানো হয় শুক্রবারই। অথচ রবিবার গভীর রাতে সিবিআই এর তরফ সুপ্রিম কোর্টে ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে অনলাইনে মামলা দায়ের করা হয়। যদিও এদিন সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা নিয়ে টুঁ শব্দটিও করেনি। ফলে কলকাতা হাইকোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ দীর্ঘ প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ওই মামলার শুনানি করে।
বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় সিবিআই এর কাছে প্রায় কৈফিয়ৎ চান, কেন সাত বছর আগের একটি মামলায় হঠাৎ করে চার্জশিট দেওয়ার পর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানোর আবেদন করল সিবিআই। অন্যদিকে গত ১৭ মে সিবিআই আদালত ওই চারজনকে জামিন দিলেও, সেদিন রাতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিলেও আইনজীবীদের অভিযোগ, এক পক্ষ অর্থাৎ সিবিআই এর বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দিয়েছিল। এদিন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এর সদস্য সৌমেন সেন এ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কি করে একপক্ষকে না শুনে রায় দেওয়া হয় তা নিয়েও কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। যদিও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, ঐদিন তারা নিম্ন আদালতের রায় দেখে শুনানি করেছিলেন।
এখন সুপ্রিম কোর্ট অবকাশকালীন বেঞ্চ মামলাটি শোনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখানোয় নতুন চমক ও জটিলতা তৈরি হলো বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। তবে তাদের মতে, শীর্ষ আদালত যখন আবেদন গ্রহণ করে, তখন নিচের আদালতে মামলা যে অবস্থায় থাক, তা নাড়াচাড়া হওয়ার কথা নয়। সেক্ষেত্রে এমনিতেই কলকাতা হাইকোর্টে বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তার আগে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট এই মামলা নিয়ে কি অবস্থান নেয় সেটা দেখে নেওয়া যাবে।