কলকাতা ব্যুরো: প্রায় ১০ ঘন্টায় যবনিকাপাত হল রাজ্যের হাইপ্রোফাইল নারদ মামলার এক দফায়। সোমবার সকাল থেকে সিবিআই এর হাতে ধৃত রাজ্যের তিন বিধায়ক সহ চারজনের গ্রেপ্তারের পর সন্ধ্যায় বিশেষ সিবিআই আদালত তাদের জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। ফলে এ যাত্রায় রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ববি হাকিম, বিধায়ক মদন মিত্র ও দলবডলু হয়ে বর্তমানে রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রাখা শোভন চট্টোপাধ্যায়েরকে আর এই মামলায় জেলে আটকে রাখতে পারল না সিবিআই। যদিও এদিন ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে সিবিআই এদের প্রভাবশালী এই যুক্তিতে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন দিয়েছিল। অন্যদিকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আইনজীবীরা চুক্তি দেন, এদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। আর এতদিন আগের একটি মামলায় এখন কোন রকম প্রভাব খাটানোর কোন প্রশ্নই ওঠে না। দিনের শেষে অভিযুক্তদের আইনজীবিদের সেই যুক্তিতেই মান্যতা দিয়ে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছে।
আদালত তাদের জামিন এর ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে ৫০ হাজার টাকা বন্ডের জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সিবিআই সূত্রের খবর নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করবে সিবিআই।
২০১৪ সালে ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে এ রাজ্যের তৎকালীন একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ সহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশন করে নারদ সংস্থা। ম্যাথু স্যামুয়েল ব্যবসায়ীর ভেক ধরে এদের থেকে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য টাকা দেয়। সেই টাকা দেওয়ার ছবি ধরা পড়ে স্টিং অপারেশনে। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে এই ছবি প্রকাশ্যে আনে ওই সংস্থা।এনিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি নিশিতা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তার পরেই তদন্ত শুরু করে সিবিআই। এর আগে এই মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার এস এম এস এইচ মির্জাকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। কিন্তু এবার বিধানসভা ভোটের পরে তিন শাসক নেতাকে গ্রেপ্তার করলেও শেষ পর্যন্ত আটকে রাখতে পারল না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যদিও ঘটনা পরম্পরা এবং সময় নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ উঠেছে রাজ্য জুড়ে। এদিন আদালতের এই জামিনের নির্দেশে বিজেপির পরাজয় হিসেবেই দেখছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ।