মৈনাক শর্মা
দেশ ও নাগরিক উন্নতির মূল মন্ত্র গণতান্ত্রিক সভ্যতা। কিন্তু ১৯৩৩ সালে তৎকালীন জার্মানের সামরিক বাহিনীর প্রধান এডলফ হিটলার প্রথম গণতন্ত্রের পরিবর্তে নিজের আধিপত্যের মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের বীজ বোনে। তারপরেই গণতন্ত্রের উপর আঘাতের সাক্ষী হয় বিভিন্ন দেশ। সেই জার্মানির মতনই জনমতকে পাশে সরিয়ে বার বার সামরিক শক্তির মাধ্যমে রাজনৈতিক তক্তা বদলের ঘটনার শিকার হয়, মধ্য এশিয়ার পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো দেশগুলি আর সেই ঘটনায় আবারো শিকার হলো ভারত প্রতিবেশী মায়ানমার।
গত বছরের নভেম্বর মাসে কাউন্সিল অফ স্টেট বা প্রধান মন্ত্রীর পদের নির্বাচনে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন ১৯৯১ সালের শান্তি রক্ষায় নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত অঙ্গ সান সুউ কিই র নেতৃত্ৰাধীন এন এল ডি পার্টি। কিন্তু আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের মতনই এই নির্বাচনের ভুল ত্রুটির অভিযোগ তোলে মায়ানমার আর্মির প্রধান মিন অঙ্গ হ্লাইং। আর তার জেরেই হবু কাউন্সিল অফ স্টেট অঙ্গ সান সুউ কিই সহ জন নির্বাচিত সরকারে থাকা বাকি মন্ত্রীদেরও জেল বন্দি করে, গোটা দেশে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করে সেনা প্রধান মিন অঙ্গ হ্লাইং। নিজের আধিপত্যের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে জনরোষ বা আন্দোলনকেকে ঠেকাতে ইন্টারনেট ও অনন্য যোগাযোগ মাধ্যম গুলিও বিচ্ছিন্ন করেফেলে।
১৯৭৪ সালে সংবিধানের মাধ্যমে গণতান্তিক কাঠামো তৈরী হয় মায়ানমারে। সংবিধান লাগু হবার সময় থেকেই সংসদের উচ্চকক্ষে ২৪৪ টি আসনের মধ্যে ৫৬ টি ও একই ভাবে নিম্ন কক্ষে মোট ৪৪০ টি আসনের মধ্যে ১১০ টি আসন সেনার জন্য রাখা হয়। কিন্তু এত ক্ষমতার পরেও ১৯৮৮ সালে সৈন্য বলের হস্তক্ষেপে প্রথম বারের মতন রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে। তারপরেও আবার এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল ২০২১ সালে। পাকিস্তানের মতনই মায়ানমারেও বিপুল ক্ষমতার অধিকারী হয় সেনা প্রধান। এক পত্রিকার সূত্রের মাধ্যমে নিজের পদের জোরে বিপুল সম্পত্তি ও পারিবারিক ব্যবসার সন্ধান মেলে মায়ানমারে সেনা প্রধান মিন অঙ্গ হ্লাইং। কিন্তু এই বছরই নিজের পদ থেকে অবসরের জন্যে বাণিজ্যিক ক্ষতি আটকানোর লক্ষেই নিজের প্রশাসনিক ক্ষমতা মজবুতের লক্ষে রাজনৈতিক পালাবদলে করে মিন অঙ্গ।
তবে পাকিস্তানের মতন ক্ষমতার ক্ষুরধার শিকার মায়ানমারে এই রাজনৈতিক রদ বদলে ভারতের তুলনায় চিনের সুবিধে বেশি, মানছেন বিশ্লেষকরা। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গিয়া গণহত্যার শিরোনামে থাকা মিন অঙ্গ হ্লাইং র উপর নিজের দেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা ব্রিটেন সহ চীন বিরোধী দেশ গুলি। তাছাড়া একদিকে কাশ্মীরে মানবাধিকারের বিগ্নিত হওয়ার অভিযোগ তোলা চীন, মায়ানমারে রোহিঙ্গিয়া গণহত্যায় নিশ্চুপ থেকে বরাবর মিন অঙ্গ হ্লাইংকে সমর্থন করে এসেছে। সে ক্ষত্রে নাম মাত্র গণতন্ত্রে বিশ্বাসী চীনের নীতিকে অনুসরণের মধ্যে মায়ানমারে বেড়ে ওঠা সৈন্যরা যে ভারতকে সীমান্ত বিবাদে চাপে ফেলতে বিশেষ সুবিধা ভোগে এগিয়ে থাকবে বেজিং।
বিশ্বের মোট দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৩৭ তম থানে মায়ানমার এই অবস্থায় দীর্ঘ মেয়াদি সৈন্য শাসন চললে আরো দুর্নীতির দিকে এগোবে দেশ সেক্ষত্রে শ্রীলংকার মতন দেনার জালে জড়িয়ে ভারতের বিপক্ষে চীনের অস্ত্র হয়ে ব্যবহার হতে পারে .তবে আফগানিস্তানের মতনই গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে দিল্লি মায়ানমারে নিজের কূটনৈতিক সম্পর্কের জেরে আপাতত সৈন্য রাজ্ কে সমর্থনে বাধ্য না হলে ভবিষ্যতে মায়ানমারে চলা বিভিন্ন প্রকল্পে বাদ পড়তে পারে ভারত . .